সংগ্রামী কৃষক মনিরুলের লোকায়ত কৃষিচর্চা
চাঁপাইনবাবগন্জ থেকে রঞ্জু আকন্দ
চাঁপাইনবাবগন্জ জেলা নাচোল উপজেলা কসবা ইউনিয়নের কেন্দবোনা গ্রামের কৃষক মনিরুল (৫৫)। তিনি বিগত ২০ বছর ধরে নানাভাবে সংগ্রাম করে জীবন অতিবিাহিত করার চেষ্টা করে আসছেন। ছোট্টকাল থেকে তিনি নানান অভাব অনটনের সাথে পরিচিত ছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে অল্প বয়স থেকে অন্যদের বাড়িতে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হতো তাকে।
নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য প্রথমে তিনি একবিঘা জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন কৃষি ফসল উৎপাদন করতে। তিনি লোকায়ত পদ্ধতিতে তাঁর কৃষি চর্চা শুরু করেন। কৃষিকাজ থেকে কিছু আয় করে তিনি আস্তে আস্তে টাকা জমিয়ে তিনি আরও ৩ বিঘা লিজ নেন এবং সেখানে শুরু করেন তাঁর লোকায়ত কৃষিচর্চা। কৃষিকাজ করে তিনি লক্ষ্য করেন তাঁর অভাব পূরণ হয়েছে এবং তাঁর জীবন বদলাতে শুরু করেছে।
তবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে নানানভাবেই বাধাগ্রস্ত হয় তার কৃষিকাজ। পানির অভাবে ফসল উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। এই সমস্যা দূর করার জন্য তিনি বিভিন্ন খরা সহনশীল ফসল চাষ করেন। বর্তমানে তাঁর এক বিঘা টমেটো ক্ষেতে সাথি ফসল হিসেবে আখ চাষসহ বাকি ২ বিঘাতে গাজর, পেঁয়াজ সরিষা ও পেয়ারা চাষ করেছন। এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন করে তিনি তাঁর লোকায়ত কৃষি চর্চা করেন।
মনিরুল জানান, ২০ বছর লোকায়ত কৃষি চর্চা করে তিনি লাভবান হয়েছেন। এলাকার চাহিদা অনুযায়ী তিনি ধান ছাড়া বিভিন্ন ফসল চাষ করে ২ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, এক ছেলেকে বাড়ি করে দিয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁর ৪ লাখ টাকার সঞ্চয় আছে। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের এলাকার সার বিষ ছাড়াই দেশি জাতের চাপাতি টমেটো চাষ করেছি। ১০ বছর ধরে এ জাতটির বীজ সংরক্ষণ করে চাষ করে আসছি। এ বছর ১২ শতক জমিতে চাষ করি। অন্য ফসলের তুলনায় সার, বিষ খুবই কম লাগে। সেচ একবার দিলেই আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। অন্য সব টমেটোর চেয়ে দাম বেশি পাওয়া যায়। আশা করছি এবার ৪০-৫০ হাজার টাকা পাব।’ তিনি সবসময় আবহাওয়ার চাহিদা অনুযায়ী ফসল চাষ করেন।