কৃষি মেলায় প্রথম পুরষ্কার পেল বারসিক
কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
কলমাকান্দা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলা অডিটোরিয়াম মাঠে ৩দিন ব্যাপি কৃষি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় মোট ১১টি স্টল বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রদর্শন করা হয়। স্টল মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়নে ১১টি স্টলের মধ্যে বারসিক কলমাকান্দা রিসোর্স সেন্টার এর স্টলটি প্রথম স্থান লাভ করেন।
বারসিক’র স্টলে মূলত আদি কৃষি উপকরণগুলো প্রদর্শন করা হয়। স্টলে ২০০টি জাতের ধানবীজ প্রদর্শন, আদি কৃষি উপকরণ যেমন হালচাষ করার জন্য গরু-লাঙ্গল-জোয়াল, মই, বিন্দা, ঢেকি, ৩ ধরণের ইদুর মারার ফাঁদ, ১২ ধরণের মাছ ধরার উপকরণ, পাখা, ১২ ধরণের ঔষধি উদ্ভিদের হারবেরিয়াম, ঝোঙ্গা, বাঁশের বাঁশি, কেচো কম্পোস্ট, উড়ি, আদিবাসী বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের সচেনতা বৃদ্ধিকরণ ফেস্টুনও ছিলো।
বারসিক’র স্টল পরিদর্শন করে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম শিমু তিনি বলেন, “ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বারসিক এনজিও কে। তাদের এমন ব্যাতিক্রম ধর্মী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। কারণ আমার দেখা একমাত্র প্রতিষ্ঠান যে কিনা আদি ও দেশীয় ধানবীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছেন আপন তাগিদে। পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করে দিচ্ছেন। এখানে আদিবাসী কিছু বাদ্যযন্ত্রও প্রদর্শীত হয়েছে, যা একমাত্র এ স্টলেই বা বারসিক এর কাছেই দেখা যায়। এখানে আরো আছে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক যা আমাদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। সর্বোপরি বারসিক আমাদের কৃষি-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা খুবই প্রশংসনীয়।’
সুবোধ হাজং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বলেন, ‘এগুলো হল আমাদের আসল পরিচয় প্রদান করে। এ স্টলে যেসব উপকরণ প্রদর্শীত হয়েছে সবই আমাদের নিত্য দিনের প্রয়োজনীয়।’ ইউপি সদস্য তাজউদ্দিন বলেন, ‘এ স্টলে সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি হলো আমাদের আদি যেসব ধানজাতগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে তা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়ে বারসিক কাজ করছে। তার প্রমাণ এই ২০০ ধরণের ধানজাত। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নূর খান বলেন, ‘এই স্টলটি আসলে স্টল মনে হচ্ছে এটি একটি কৃষি মিউজিয়াম। কারণ এখানে অনেক কৃষি উপকরণ দেখা যাচ্ছে যা আমরা হারাতে বসেছি।’ রংছাতি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে সেরা একটি স্টল কারণ এখানে আদিকালের বৈচিত্র্যময় কৃষি উপকরণ প্রদর্শন। কারণ এগুলো এখন আর দেখা যায় না।’ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: অলিউল্লাহ বলেন, ‘১১টি স্টলের মধ্যে উত্তম ও সেরা বারসিক এর স্টলটি। কারণ এরকম কৃষি উপকরণ কেউ এই মেলায় প্রদর্শন করতে পারেন নাই। ধন্যবাদ জানাই বারসিক’র এমন মহতি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য।
স্টলটির সার্বিক তত্ত্ববধানে ছিলেন আব্দুল মোতালিব। তিনি স্টল পরিদর্শনকারীদের স্টল সম্পর্কে ও কৃষি উপকরণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলেন। এমনকি তিনি ইদুর মারার ফাঁদ কিভাবে তৈরি করতে হয় এবং কিভাবে ফাঁদ পাততে হয় সব কিছু মেলায় আসা লোকদের দেখিয়ে দেন। এসব সার্বিক দিক বিবেচনা করা বারিসক এর স্টলটি প্রথম স্থান অধিকার করে।