বিল হেলুচিয়া এখন জানমা’র
নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
দারিদ্রতার সাতকাহনে মোড়া জেলেদের জীবন। এত নাই নাই, হাহাকার, শূন্যতার মাঝেও বৈরিতার ভিতরে স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন বুনেন জেলেরা। জল, জাল, নদী, হাওর, বিল কিছুই আর জেলেদের নিয়ন্ত্রণে নেই। দিনদিন কমে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ, দখল হয়ে যাচ্ছে জলমহাল,শুকিয়ে যাচ্ছে নদী, নালা, খালবিল, মাছের অভয়াশ্রম, প্রজনন কেন্দ্র, বিলুপ্ত বিপন্ন মাছের প্রজাতি, হারিয়ে যাচ্ছে পেশা।
১৩টি পরিবার মিলে জলমহালের উপর অধিকার আদায়,স্থানীয় জাতের মাছ রক্ষা, সরকারি পরিসেবায় তাদের অন্তভূক্তি, সুমাইখালি উদ্ধার এবং সংগঠিত হবার যে ভালো উদ্যোগ, তা দেখে মগড়া পাড়ের আরো ৩৭৬টি জেলে পরিবার তাদের সাথে যোগাযোগ করে সংগঠিত হবার চেষ্টা করে এবং আরো ১০টি সংগঠন গড়ে তোলে।
জেলে-জেলে একে অপরের সাথে যোগাযোগ, মতবিনিময়, সহভাগিতার ফলে তাদের মাঝে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে, সকলে মিলে তাদের এলাকা ভিত্তিকসমস্যা সমাধান করতে পেরে তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠেছে। সম্পদব্যক্তি হিসেবে জানমা উপজেলা কমিটির সভাপতি যোগেশ দাস কলমাকান্দা, মধ্যনগর জেলেদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের অধিকার আদায়, সমস্যা সমাধানে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য পরামর্শ করেন।
জানমা উপজেলা কমিটির সভাপতি যোগেশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘মগড়া নদী পাড়ে বসবাসকারী ও আশেপাশের জেলেআমরা আমাদের জীবন যাত্রার জন্য মগড়া নদী ও এর চারপাশে যে সব জল মহাল আছে তার উপর নির্ভর করে জীবন জীবিকা, চালিয়ে যাচ্ছি।’ জেলেদের চাহিদা অনুযায়ী তারা উপজেলা জলমহাল কমিটিতে তিনজন জেলের নাম অন্তভূক্তি করেন। জেলেদের আন্দোলন ও উদ্যোগের ফলে বিলহেলুচিয়া, কালোমগড়া নদী ছয় বছরের জন্য জেলেরা লীজ গ্রহণ করেন। যেখানে জেলেরা তাদের পেশা, জীবিকা বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করবে পাশাপাশি তাদের অধিকার ও সমাজে সম্মানের জায়গা তৈরি হবে। তাছাড়া বাল্লার খাল, পেতনি বিল, কুতুবপুর পুকুর জেলেরা লীজ গ্রহণ করেছেন। ফলে জেলেদের মাঝে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
জেলেদের এই উদ্যোগ ও কাজ শুরু নেত্রকোনা অঞ্চলের জেলেদের জন্যই নয় সারাদেশের জেলেদের জন্যই একটি উদাহরণ।