নিরাপদ খাদ্য হিসাবে অচাকৃত উদ্ভিদের বিকল্প নেই
মানিকগঞ্জ থেকে গাজী শাহাদৎ হোসেন বাদল
এক সময় বুনো শাকসবজি ছিলো গ্রামীণ সমাজে মানুষের খাবারের অন্যতম উৎস। বিশেষ করে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলো অধিকাংশ পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতো বাড়ির আশেপাশে জন্মানো নানা প্রকারের গাছ ও লতা পাতা। বর্তমানে কৃষি আধুনিকায়নে মানুষের অভ্যাস ও রুচির পরিবর্তন এসেছে। কদর কমেছে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ নিরাপদ সহজলভ্য এ খাদ্যসম্ভারের। ব্যবহার কমে যাওয়ার সাথে সাথে তৈরি হচ্ছে এ সব আপনা আপনি জন্মানো উদ্ভিদের অস্তিত্ব সংকট। তাই পরিবেশবান্ধব এবং স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন এ সব উদ্ভিদের সংরক্ষণ, ব্যবহার ও বিকাশ ঘটানোর তাগিদে কৈতরা গ্রামে এ সব উদ্ভিদ বিষয়ক মেলার আয়োজন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিলো নিজের খাদ্য তালিকায় যুক্ততা বৃদ্ধি ও নতুন প্রজন্মের কাছে আপনজালা উদ্ভিদের গুনাগুণ তুলে ধরা।
সম্প্রতি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৈতরা কৃষক কৃষাণি সংগঠনের সদস্যদের পক্ষ থেকে তেলাকুচা, থানকুনি ঢেকিশাকসহ ২৫ প্রকারের উদ্ভিদ প্রদর্শনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে এর গুনাগুণ উপস্থাপন করা হয়। এ সচেতনামূলক অনুষ্ঠানে গ্রামের কৃষক কৃষাণি ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ অর্ধশতাধিক নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে। প্রবীণ কৃষক হাসিয়া বেগম নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, ‘আগে এসব উদ্ভিদ বেশি খাওয়া হতো। আমরা এখনো খাই তয়, আগের চাইতে কমছে। এইডা আমাগো দেহের জন্য ভালো।’ কৃষাণি শাহিদা বলেন, ‘এইডা পতিত জমিতে হয়। আমাগো বাড়ির আশে পাশে হয়। শুধু কষ্ট কইরা জোগার করলেই হয়।’
সকলের আলোচনা প্রেক্ষিতে স্কুল ছাত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমার মা রান্না করে। তবে তেমন একটা খাই না। আজ এই খানে এসে এর উপকারিতা জানতে পারলাম। এখন বাড়িতে বেশি বেশি রান্না করতে বলবো। সেই সাথে আমার বন্ধুদেরও বলবো এসব উদ্ভিদের গুনের কথা।’
আসলে বিশুদ্ধতা নিরাপদ খাদ্যের কথা বলতে গেলে এসব উদ্ভিদের নাম অগ্রগণ্য। মূলত নিরাপদ খাদ্য হিসাবে অচাষকৃত উদ্ভিদের বিকল্প নেই। তাই আমাদের নিজেদের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হলে এসব উদ্ভিদ সংরক্ষণ, ব্যবহার ও বিকাশের উপর গুরুত্ব আরোপ করা জরুরি।