দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যুবরাই প্রাণ
নেত্রকোনা থেকে অহিদুর রহমান:
মোকাবেলায় নেত্রকোণা সম্মিলিত যুব সমাজের গৃহীত উদ্যোগ ও করণীয় বিষয়ক অনলাইন মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান, রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুল ও কলেজ এর অধ্যক্ষ মো. গোলাম মোস্তফা, নেত্রকোণা সম্মিলিত যুব সমাজ এর সদস্যবৃন্দ এবং বারসিক নেত্রকোণা রিসোর্স সেন্টার এর কর্মকর্তাগণ।
অনলাইন মতবিনিময়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এটা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত যে, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যুবরাই প্রাণ। তারা যদি সঠিক পথে যায় তাহলে সমাজ ব্যবস্থা ও দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাবে। প্রতিদিনই বিশ্বে আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এটার জন্য ঝুঁকি নেয়া, সাহসিকতা আর যে সৃষ্টিশীলতা দরকার সেটা নতুনদের মধ্যেই দেখা যায়। আজকের যে যুবক, সে যে টেকনোলজির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠছে সেটা পঞ্চাশ বছর আগে যার জন্ম এসবের সাথে পরিচিত ছিলেন না। তাঁকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। নেত্রকোণায় করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই আমাদের যুব সমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয় কাজ করেছে। এখানে সংখ্যাটা বা হিসাবটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সামর্থ্যরেও বিষয় আছে। তাই বলে যাদের সামর্থ্য কম তাদের যে আন্তরিকতা নেই এটা বলা যাবেনা। এখানে আন্তরিকতাটাই মূখ্য। পরিমাণ দিয়ে এটা বিবেচনা করা যায় না। সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে।’
নেত্রকোণা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান করোনা কালীন সময়ে তাঁর কার্যালয় থেকে যুবদের জন্য গৃহীত উদ্যোগগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে বলেন, ‘বর্তমানে যুবদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে যুক্ত করার জন্য ভর্তি কার্যক্রম চলছে। ১৫ জুলাই থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় অনাবাসিক প্রশিক্ষণ করানো হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় আবাসিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জুন ২০২০ইং মাসে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫৮ জন যুবকে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করার জন্য ৫০ লাখ ৩০হাজার টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ৯০ জন যুব উদ্যোক্তাকে ৯০ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।’ আগামী ১৫ জুলাই যুব দক্ষতা দিবস পালনের জন্য নেত্রকোণা সম্মিলিত যুব সমাজ ও বারসিকের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
আলোচনার শুরুতে সম্মিলিত যুব সমাজ এর সদস্য পার্থ প্রতীম সরকার করোনাকালীন সময়ে তাদের সংগঠনের গৃহীত উদ্যোগ সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে যে সকল শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের বাইরে আছে তাদের মেধা মনন বিকাশের জন্য আমরা দলিত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ উপহার হিসেবে প্রদান করছি। বিনিময়ে তারা যেন পড়ালেখায় উৎসাহিত হয় এর জন্য ঘরে বসে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করছি। এছাড়া করোনা মোকাবেলায় আমরা দলিত ও দরিদ্রদের মাঝে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান ইত্যাদি বিতরণ করেছি।’
যুব সদস্য ফরিদুর রেজা নাফিস মাননীয় জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে অনেক করোনা রোগী আছে। এই হাসপাতালের সামনে বিভিন্ন দোকানে অনেকেই ভিড় করে। বর্তমান সময়ে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই জায়গাগুলোকে যেন জনসমাগম মুক্ত করা হয়। এই শহরে বিভিন্ন খাবারের দোকান আছে কিন্তু শুধুমাত্র একটি দোকান ছাড়া কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার পরিবেশন করা হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া করোনা চিহ্নিত হওয়ার প্রথম দিকে সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মানলেও বর্তমানে কেউ মানছেনা। নেত্রকোণার স্থানীয় ক্যাবল চ্যানেল এ উক্ত বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণার জন্য জেলা প্রশাসককে বিনীত অুনরোধ করছি।’