নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার আহবান
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার
‘নদী বাঁচায় প্রাণ-প্রকৃতি, নদীর প্রাণ রক্ষা চাই’-শ্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল ১৪ মার্চ বিশ^ নদীকৃত্য বা বিশ^ নদী রক্ষা দিবস উপলক্ষে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের মেঘশিমুল গ্রামে ধলেশ^রী নদীর পাড়ে ধলেশ^রী নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে এবং বারসিক’র সহযোগিতায় আলোচনা সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2022/03/274751623_393596839163183_6537959364528638056_n-1024x564.jpg)
ধলেশ্বরী নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি জরিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়। দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে সরকার উদ্যোগ নিয়ে ধলেশ্বরী নদী খনন করেছে। এখন নদীতে পানি থাকে। সবাই গোসল করতে পারেন, গরু ঝাপাতে পারেন। মহামান্য হাইকোর্ট নদীকে জীবন্তসত্ত্বা ঘোষণা করেছে। তাই যে কেউ চাইলেই নদীকে দখল ও দূষণ করতে পারবে না। আজ বিশ্ব নদীকৃত্য বা নদী রক্ষা দিবস। বিশে^র বিভিন্ন দেশ নদী রক্ষার জন্য আজকের দিনটি পালন করে থাকে। আমরাও চাই ধলেশ^রী নদীসহ সকল নদী রক্ষা করা হোক। নদীর সাধারণ পানি প্রবাহ নিশ্চিত হোক।’
ধলেশ^রী নদী পাড়ের ব্যবসায়ী মো: ইজ্জত আলী বলেন, ‘নদী কাটার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। নদী কেটেছে এটা ভালো হয়েছে। কিন্তু নদী যেভাবে কাটার কথা ছিল সেভাবে কাটা হয়নি। কোথাও অনেক গভীর করেছে আবার কোথাও কাটেইনি। নদীতে যাও পানি থাকে তা ব্যবহার করা যায় না। নদীর পানি ব্যবহার উপযোগি করার দাবি তুলছি।’
জরিনা বেগম বলেন, ‘নদীতে যে পানি আছে তা দূষিত পানি। এই পানিতে গোসল করা যায় না, গরু ঝাপানো যায় না। গা চুলকায়। বর্জ্য ফেলে পানি প্রতিদিন দূষিত করছে। এটি বন্ধ করা প্রয়োজন। আমরা নদীতে পরিষ্কার পানি দেখতে চাই। নদীতে গোসল করতে চাই। এর জন্য বারসিক ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। আমরা সবাই মিলে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করবো। আমরা আমাদের সমস্যা তুলে ধরবো। সবাই মিলে একসাথে কাজ করবো।’
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2022/03/274486469_966161780707137_8492518382200425678_n.jpg)
মানববন্ধনে বক্তারা দাবি তোলেন, অবিলম্বে নদী দূষণকারীদের আইনের আওতায় এনে পানিকে জীববৈচিত্র্য রক্ষার উপযোগি করা। নদীর খনন কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদী করে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ সচল করা। নদীর দখল ও দূষণ রোধে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস যাকে আরেকভাবে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নদী রক্ষায় করণীয় দিবস। ১৯৯৮ সাল থেকে সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৭ সালের মার্চে ব্রাজিলের কুরিতিয়া শহরে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নদীর প্রতি মানুষের করণীয় কী, নদী রক্ষায় দায়িত্ব, মানুষের দায়বদ্ধতা কতটুকু; এসব বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নদী সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ও মানুষের মধ্যে নদী ভাবনা তৈরি করতে গ্রীন ভয়েস জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের- ‘নদী বাংলাদেশের প্রাণ, দেশ বাঁচাতে নদী বাঁচান,’ এই স্লোগান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো তাদের নিজেদের মত করে দিবসটি উদযাপন করে থাকে।