জানবো আইন, বাঁচাবো পরিবেশ

নেত্রকোনা থেকে অনাবিলা সরকার অনা
নেত্রকোনা সম্মিলিত যুবসমাজের আয়োজনে ও বারসিকের সহযোগিতায় সম্প্রতি নেত্রকোণা বড়পুকুর পাড়ে উপস্থিত উদীচী মিলনায়নে দিনব্যাপী মাটি-পানি-বায়ু-শব্দ দূষণ থামাও এই শ্লোগানকে সামনে রেখে “পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫” বিষয়ে যুব প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন নেত্রকোণা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবু সাঈদ। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ বিষয়ে ও পরিবেশ সুরক্ষায় অন্যান্য আইন নিয়ে একটি সেশন পরিচালনা করেন।


প্রথমেই অনাবিলা সরকারের পরিচালনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে কর্মশালার সূচনা হয়। বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান প্রশিক্ষণের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নেত্রকোনা অঞ্চলের পরিবেশগত বিপর্যয় বিষয়ে শুভেচ্ছা কথা উপস্থাপন করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী নেত্রকোণা অঞ্চলের ২৪টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ সংগঠনের পরিবেশ বিষয়ে বিগত দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। যুবরা বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ, নিমগ্রাম তৈরি, সবুজ গ্রাম তৈরি, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যবহার কমানো, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও ব্যবহার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নদী রক্ষা, পুকুর রক্ষা, শতবর্ষী গাছ চিহ্নিতকরণ ও রক্ষা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবেশীয় শিক্ষা প্রদানে সহযোগিতা, বর্জ্যব্যবস্থাপনা, শতবাড়ি মডেল তৈরীসহ বৈচিত্র্যময় উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।


প্রধান অতিথি মো. আবু সাঈদ সেশন পরিচালনা করতে গিয়ে বর্তমানে পরিবেশ দূষণের কারণ, পরিবেশ আইন, প্রয়োগ, মানুষের সচেতনতার অভাব, সরকারের নানা ভালো উদ্যোগ ও প্রয়োগ, পরিবেশ রক্ষায় যুবদের ভূমিকা ও কি কি করতে পারে কি কি করার আছে একটি সুন্দর নগর গ্রাম তৈরি করতে কি করতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি যে কোন পরিবেশগত সমস্য নিয়ে যোগাযোগ করার জন্য যুবদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরিবেশকে ভালো রাখার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। সবশেষে যুবরা একটি সুন্দর পরিকল্পনার মাধ্যমে নেত্রকোনাকে পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু বান্ধব জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার কথা ব্যক্ত করেন এবং বারসিক’র সহযোগি আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শংকর ম্রং সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।


উল্লেখ্য, মাটি, পানি, বায়ু, শব্দ দূষণসহ নানা দূষণের ভয়াবহতার মধ্য দিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বাংলাদেশ। মানুষের অপরিকল্পিত উন্নয়ন, আইন না মানার সংস্কৃতি, সতেনতার অভাব, প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহার, জলাভূমির বিলুপ্তি, কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার, কারখানা, হাসপাতাল, বাসাবাড়ির বর্জ্য, ই-ডাস্ট, জীবাশ্ম জ¦ালানির অতি ব্যবহারসহ নানা কর্মকান্ডে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বিপর্যয় বেড়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে কৃষিতে, প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এমন সব মিঠাপানির মাছের উপর, মানুষের পেশার উপর, জনস্বাস্থ্যের উপর। পাশাপাশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। বারসিক বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সহযোগিতা মাটি পানি,বায়ু শব্দ দূষণরোধে নেত্রকোণা অঞ্চলের বিভিন্ন পেশাবৈচিত্র্যের জনমানুষের সাথে কাজ করে যাচ্ছে প্রায় দুইযুগ ধরে।

happy wheels 2

Comments