গোলাপী বেগমের পুষ্টি বাড়ি
রাজশাহী থেকে তহুরা খাতুন লিলি
রাজশাহীর নামোভদ্রাতে ২০ বছর ধরে বসবাস করেন গোলাপী বেগম। তাঁর পৈতৃক বাসা ছিলো নীলফামারীর হাজারির হাটে। নদী ভাঙনের ফলে রাজশাহীতে এই নামোভদ্রাতে এসে ঠাঁই নিয়েছে। প্রথমে এসে কোনোরকম কাপড় আর বাঁশ দিয়ে ছাউনি করে থাকতেন। এখন আস্তে আস্তে টিন দিয়ে গড়ে তুলেছেন। গোলাপী বেগমের ৩টি মেয়ে। বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণীতে থাকার সময় বিয়ে হয়ে গেছে। মেজো মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে, আর ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে। গোলাপী বেগমের স্বামীর নাম বাচ্চু। প্রথমে যখন বস্তিতে আসেন তখন মুড়ি মাখানো বিক্রি করতেন, তারপর রিক্সা চালাতো। তবে বর্তমানে অসুস্থতার কারণে তাঁর স্বামী বাসাতেই চায়ের দোকান চালান।
গোলাপী বেগমের বাসার পিছনে সামান্য জায়গা আছে। তাতে তিনি আম গাছ, সজিনা মরিচ গাছ লাগিয়েছিলেন। তাতে কিছু ফলনও হয়েছিলো। তবে ২০২০ সালে বারসিক’র সহায়তায় তিনি তাঁর জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে শুরু করেন। বারসিক’র কর্মীরা তাকে নানানভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন। পুষ্টিব্যাংক সম্পর্কে তাঁকে ধারণা দেন তারা। তিনি এতে আরো উৎসাহিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি আবাদ করেন। নিয়মিত পরিচর্যায় ফলন ভালো হয়েছে।
শাকসবজি পরিবেশবান্ধব উপায়ে চাষ করে গোলাপী বেগম তাঁর পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সমর্থ হয়েছেন বলে তিনি জানান। তিনি বর্তমানে লাল শাক, সবুজ শাক, পুই শাক ,সজিনা, কলা, মরিচ চাষ করেছেন এবং ইতিমধ্যে সংগ্রহও করেছেন। এমনকি তিনি করোনার সময় সজিনা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবানও হয়েছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘করোনার সময়ে আমি মোট চার হাজার টাকার সজিনা বিক্রি করেছি। এতে করে পরিবারের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পেরেছি। বারসিক’র সহযোগিতায় পরিবেশবান্ধব উপায়ে শাকসবজি আবাদ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছি, আমার পরিবারের সবজির চাহিদাও পূরণ করতে পেরেছি।’
বর্তমানে গোলাপী বেগমের বাসার পিছনের জায়গায় সজিনা, পেঁপে, পুইশাক, মরিচ, বেগুন, লাউ, শিম, পেঁয়াজ, রসুন রয়েছে। খুব শিগগিরই এগুলো ঘরে তুলবেন বলে তিনি জানান।