মানিকগঞ্জে কৃষক গবেষকদের পথ চলা
মানিকগঞ্জ থেকে মো. মাসুদুর রহমান
জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের অগ্রপথিক করম আলী মাষ্টারের সভাপতিত্বে ও স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে গতকাল বারসিক মানিকগঞ্জ শহর কার্যালয়ে জেলার ঘিওর, হরিরামপুর, সিংগাইর ও সদর উপজেলা থেকে আগত ১৯ জন কৃষক/কৃষাণী গবেষকদের অংশগ্রহণে গবেষণালদ্ব জ্ঞান সহভাগিতা ও ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়ের সঞ্চালনায় কৃষক গবেষকগণ তাদের গষেণার প্রাপ্ত ফলাফল ও পরীক্ষাধীন কার্যক্রম ব্যক্ত করেন। কৃষক গবেষক মো. মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি কৃত্রিম ইনকিউবিটরের সাহায্যে মুরগির ডিম ফুটানো কাজে ও চলতি মৌসুমে সরিষার জাব পোকার তীব্র আক্রমণরোধে গুল ও সাবান গুঁড়া দিয়ে তৈরি বালাই নিবারক প্রয়োগে সফল হয়েছি।’ ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘ঘিওর উপজেলার সাইলকাই গ্রামের ৩০টি পরিবার পরীক্ষামূলকভাবে হাজল তৈরি ও ব্যবহারে উপকার পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী অন্যান্য গ্রামে সম্প্রসারিত হচ্ছে।’
তারা জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বারসিকের সহায়তায় গ্রামের প্রায় ৪০টি বাড়িতে ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপিত হওয়ায় গ্রামটি জৈব পল্লী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই প্রসঙ্গে কৃষক গবেষক লালচান বলেন, ‘সদর উপজেলার বেতিলা চরে গত আমন মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে ২ একর জমিতে রোপা পদ্ধতিতে মকবুল ধানের আবাদ করা হয় যা সামান্য বর্ষার পানিতে উৎপাদিত হয়েছে। সেচের প্রয়োজন না পড়ায়, মাঠ দিবসের মাধ্যমে ১৩ জন কৃষক কৃষাণী আগামী আমন মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ২৫ কেজি বীজের চাহিদা করেছেন।’ প্রবীণ কৃষক গবেষক ইব্রাহিম মিয়া ও ফিরোজ আহম্মেদ গলাছিলা মুরগী ও কবুতরের জাত বাছাই কার্যক্রমের ফলাফল উপস্থাপন করেন।
কৃষক গবেষকগণ চলতি বোরো মৌসুমে ১৮৪ শতাংশ জমিতে এস.আর.আই পদ্ধতিতে ধান চাষ, ফসলের বন্ধু ও শত্রু পোকা পরিচিতি প্রচারাভিযান ও ব্রিডিং এর মাধ্যমে ধানের জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। আরো বেশি সংখ্যক কৃষক গবেষক তৈরি তথা গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা ও শক্তিশালীকরণের জন্য তারা একজন টিম লিডারসহ ১৫ সদস্য বিশিষ্ট গবেষক দল গঠন করেন। সবশেষে শংকরায়নের মাধ্যমে ধানের জাত উদ্ভাবন বিষয়ক ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী ও কৃষক গবেষক দলের সমন্বয়কের পরিকল্পনা উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে সমন্বয় সভার সমাপ্তি ঘটে।