বাল্য বিবাহ ও মাদক রোধে আমাদেরও দায়িত্ব আছে
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
বাল্য বিবাহকে না বলি, নৈতিকতায় জীবন গড়ি, মাদককে না বলি, ক্রীড়া ও সাংষ্কৃতিক চর্চা করি এসব স্লোগানের আলোকে বাল্য বিবাহ, মাদক ও সততার চর্চা বিষয়ে নবগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে এক বক্তৃতামালা আয়োজন করা হয়েছে। উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় নবগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সম্প্রতি। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ৮০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
নবগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাল্য বিবাহ, মাদক ও সতাতার চর্চা বিষয়ে স্কুল ক্যাবিনেট সদস্য শাবানা আক্তাররের ধারণাপত্র উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মূল আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন বারসিক আঞ্চলরিক সমন্বয়কারি বিমল রায়, বিশেষ আলোচক ছিলেন প্রোগাম অফিসার শিমুল কুমার বিশ্বাস, শিক্ষিকা লিপিকা তরফদার, দশম শ্রেণীর শিক্ষর্থী আদ্রিতা সরকার, রাফি আহমেদ ও স্কুল ক্যাবিনেট সদস্য শাবানা আক্তার প্রমুখ।
আলোচনায় নবগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাল্য বিবাহ ও মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। পারিবারকি অসেচতনতা, শিক্ষার অভাব ও পরিবেশগত কারণেই এর প্রসার ঘটে থাকে। শিক্ষার্থীদের সততা, নৈতিকতা, দায়িত্ববোধই একদিন সমাজকে আলোকিত করবে।’ বারসিক’র প্রোগ্রাম অফিসার শিমুল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘নৈতিকতা ও সততা একজন মানুষকে আদর্শবান করে গড়ে তুলে। কিন্তুু মাদক ও বাল্য বিবাহ সেই আদর্শের পথে বাধা হিসেবে কাজ করে। নতুন প্রজন্মকেই এ বাধা ভাঙতে হবে। বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায় বলেন, ‘আজকের নতুন প্রজন্মই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। তাই নতুন প্রজন্মাকে হতে হবে সৎ, আদর্শবান, ও চরিত্রবান ও মাদক মুক্ত। বাল্য বিবাহ, মাদক ও অন্যান্য সামাজিক অন্যায় প্রতিরোধে ৯৯৯ ফোন করার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
শিক্ষার্থী রাফি আহমেদ বলেন, ‘নৈতিকতার অবক্ষয় ও মাদক সেবনের কারণেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইভটিজিং ও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’ আদ্রিতা সরকার বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বাল্য বিবাহ হয়। আমরা শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দল করে বাল্য রোধে ভূমিকা রাখতে পারি। মাদক মানুষের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে। তাছাড়া যে ছেলেটি মাদক সেবন করে তার কাছে আমার পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজন কেউ নিরাপদ নয়। বাল্য বিবাহ ও মাদক রোধে আমাদেরও দায়িত্ব আছে।’ স্কুল ক্যাবিনেট সদস্য শাবানা আক্তার বলেন, ‘ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর মেয়েদের বাল্য বিবাহ বেশি হয়ে থাকে, বাল্য বিবাহ একজন কিশোরী মেয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে দেয়। বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, মাদক, সততার চর্চা, বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন রাখা বিভন্নি ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করাই হবে আমাদের ক্যাবিনেটের কাজ।’