সাম্প্রতিক পোস্ট

মুক্তিযুদ্ধের গল্পে নতুন প্রজন্মকে প্রেরণা

মানিকগঞ্জ থেকে শিমুল বিশ্বাস ও শাহীনুর রহমান

আগামী দিনে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অন্যতম ভূমিকা পালন করতে পারে আমাদের নতুন প্রজন্ম। এবারের স্বাধীনতা দিবস ২০১৭ উদ্যাপন উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার নবগ্রাম বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শোনানো হলো মুক্তিযুদ্ধের গল্প।  IMG_20170326_102553৪৬তম স্বাধীনতা দিবস  উদ্যাপন উপলক্ষে  নবগ্রাম বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন বারসিক‘র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস উপস্থাপন করতে ‘আমার স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে  উপস্থিত বক্তব্য প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা তোবারক হোসেন লুডু‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এ আলোচনা সভায় বড় কালিয়াকৈর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি আসমান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক মো. জাজালউদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. করম আলী, মো. বিল্লাল হোসেন, শহীদুল ইসলাম ঝন্টুসহ উপস্থিত ছিলেন বারসিক কর্মকর্তা শিমুল বিশ্বাস, শাহিনুর রহমান ও গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল প্রমুখ। IMG_20170326_103235এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা তোবারক হোসেন লুডু শিক্ষার্থীদের লেখা দেয়ালিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় তিনি বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন প্রজন্মই পারবে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে সামনে এগিয়ে নিতে।” তিনি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পাঠ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি বিনীত আহবান জানান।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, “আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। তবে মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ২৫ মার্চের গণহত্যা। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে যখন স্বাধীনতা আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন, তখন পাক শাসক পরিকল্পিতভাবে ২৫ মার্চে এই গণহত্যা চালায়। তখন আমি ছাত্র ছিলাম। আমিও যুদ্ধে যোগ দিলাম। আজ তোমরা যে স্কুলে লেখাপড়া করছো এটা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। পাশেই গোলাই ডাংগা। সেখানে বড় ধরনের যুদ্ধ হয়। তোমাদের এ সব বিষয়গুলো জানতে হবে। তাহলে দেশাত্মবোধ জাগ্রত হবে। দেশকে ভালোবাসতে পারবে। তোমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করবে।”

IMG_20170326_110519
স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতায় সাথী আক্তার, সামাতুল জান্নাত, মাহফুজা আক্তার এবং বক্তব্য প্রতিযোগিতায় তুলি মন্ডল, অন্বেষা রায়, মরিয়ম আক্তার বিজয়ী হয়। বিজয়ীদের মাঝে বারসিক এর পক্ষ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তাছাড়া ৩৫টি লেখা সংকলন করে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা প্রকাশ করেন ‘সাতরং’ ও ‘সেজুঁতি’ নামে স্বাধীনতা বিষয়ক ২টি দেয়ালিকা।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, “দেশের উন্নয়নের জন্য দেশাত্ববোধ অত্যন্ত জরুরি। যে দেশাত্ববোধের মুল মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালে বীর বাঙালি হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রু মুক্ত করেছিল প্রিয় দেশমাতৃকাকে। স্বাধীনতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগেই আবার আঘাত। ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় নির্মমভাবে। শুরু হয় স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার কাজ। যে কারণে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানে না দেশের নতুন প্রজন্ম । তাই নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশাবোধ জাগ্রত করতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার বিকল্প নাই।”

happy wheels 2

Comments