আকন্দ রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত উপকারী
চাটমোহর, পাবনা থেকে ইকবাল কবীর রনজু
উদ্ভিদ জগত বড়ই বিচিত্র। রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধে আদিকাল থেকেই কাল কালান্তর কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে উদ্ভিদ। যে সকল উদ্ভিদ রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখছে তার মধ্যে আকন্দ অন্যতম। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যালোট্রপিস গিগ্যানটি। মরু অঞ্চলে আকন্দের আবির্ভাব। আকন্দের সাদা কষে আকুনডরিন, ক্যালোট্রপিন ও এনজাইম নামক রাসায়নিক উপাদান থাকে যা রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত উপকারী।
আমাদের দেশের অতি পরিচিত মাঝারী ধরণের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ আকন্দ নানান ওষুধি গুনে সমৃদ্ধ। গ্রামাঞ্চলের উঁচু জায়গা ঝোঁপ ঝাঁর রাস্তা রেল লাইনের পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় অবহেলা অনাদরে বেড়ে ওঠে। উচ্চতায় সাত-আট ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ গাছের ছাল ফুল পাতা ও কষ বিভিন্ন কার্যে ব্যবহৃত হয়। ধুসর বর্ণের ছাল যুক্ত আকন্দ গাছের কান্ড বেশ শক্ত হয়। এ গাছের পাতা শাখা প্রশাখা ভাঙলে বা কাটলে সাদা রঙের কষ বের হয়। শে^ত বর্ণের আকন্দের ফুলের রঙ সাদা ও লাল আকন্দের ফুল বেগুনী রঙের হয়ে থাকে।
বায়ু নাশক, চুলের রোগ, ফোলা, পান্ডু রোগ, কুষ্ঠ, পাকস্থলীর ব্যাথা নিরাময়ে ও হজমে বিশেষ ভূমিকা রাখে আকন্দ। ব্যাথা, বেদনা, টাক পরা, ফোলা, দাদ, ক্রিমি, শ্বাস কষ্টে আকন্দ উপশমক হিসেবে কাজ করে। হাপানী, অগ্নিমান্দ্য ও অম্ল রোগের জন্য ও আকন্দ উপকারী। ব্রণ ফাটাতে, বিছার কামড়ের জ¦ালা নিরাময়ে, বুকে স্বর্দি বসে গেলে, শিশুর মাথা অস্বাভাবিকভাবে বড় হলে, কান থেকে পুজ পরা, খোস পচরা, একজিমা, দাঁতের ব্যাথা নিরাময় ও গর্ভপাতে আকন্দ পাতার রস বিশেষ ফল দায়ক।
অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠলেও আকন্দ চাষযোগ্য। চাষের ক্ষেত্রে মে-জুন মাসে তিন থেকে চার ফুট দূরত্বে আকন্দ গাছ লাগানো ভালো। মোথা ও সাকার অন্যান্য অংশ থেকে আকন্দ গাছ বেশি বংশ বিস্তার করে থাকে। বাংলাদেশে সাধারণত ছোট ও বড় এ দু প্রজাতির আকন্দ পাওয়া যায়। শ্বেত আকন্দ ও রক্ত আকন্দ বড় আকন্দের দুটি উপ-প্রজাতি।
আকন্দের ফুল, পাতা, শিকর ও আঠা বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে বিষাক্ত বলে আকন্দ থেকে তৈরি ভেসজ ওষুধ ব্যবহারের সময় মাত্রা ও পরিমাণের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা ও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।