ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা
রাজশাহী থেকে অসীম কুমার সরকার
মাত্র দু’দিন পরই পয়লা বৈশাখ। তাই শেষ মুর্হূত পয়লা বৈশাখের সামনে রেখে মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। জেলার তানোর উপজেলার কালীগঞ্জ হাবিবনগর, শ্রীখন্ডা ও পাশ্ববর্তী এলাকা মোহনপুরের বেলনা ও পবা উপজেলার বাগধানীর বসস্তপুর গ্রামে র্নিঘুম দিন পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
লাল-সাদা পোশাকের আধিক্য আর নানা রঙের পণ্য নিয়ে জায়গায় জায়গায় বসবে বৈশাখী মেলা। আর এসব মেলার চাহিদা মেটাতে ও মাটির তৈরি জিনিসপত্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। বিশেষ করে তানোর হাবিবনগরের মাটির কারুকার্যময় ফুলের টব ও পবার বসস্তপুরের সখের হাড়ির সুখ্যাতি রয়েছে। আর পয়লা বৈশাখ এলে এর চাহিদা বেড়ে চায় কয়েক গুণ। তাই দিনরাত পরিশ্রম করে তাঁরা মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির তৈরি পুতুল, সখের হাড়ি, ফুটের টবসহ বিভিন্ন খেলনার আকৃতি দিচ্ছেন।
বেশ কয়েকটি পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কেউ মাটি গুঁড়া করে কাদা করছেন, কেউ মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করছেন, কেউবা বিভিন্ন পশুপাখির আকৃতি তৈরিতে ব্যস্ত। আবার কেউ মাটির তৈরি জিনিসপত্রে রঙ-তুলি দিয়ে হরেক রকমের নকশা করছেন। অনেকে সদ্য তৈরি পণ্যগুলো রোদে শুকাচ্ছেন। এক দল ব্যস্ত রোদে শুকানো জিনিসগুলো আগুনে পোড়ানোর কাজে। এসব কাজে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা-মাকেও নানাভাবে সাহায্য করছে।
তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জ হাবিবনগর গ্রামের মৃৎশিল্পী গৌতম পাল জানান, তাঁদের কাছে মাটি সোনা। এই সোনাকে ভালোবেসে এখনও বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে আছেন। যদিও এখন তিনি মাটির ব্যাংক, ফুলের টবসহ হরেক রকম জিনিসপত্র তৈরিতে প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছেন। তাঁর তৈরি পণ্যগুলোর মধ্যে মাটির ব্যাংক ও নক্সীর বাহারি ফুলের টব মেলায় সরবরাহ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হবে।
পবা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের বিখ্যাত সখের হাড়ি তৈরির মৃৎশিল্পী সুশান্ত পাল বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারও আমি বৈশাখী মেলার জন্য খেলনার পাশাপাশি সোনালি রঙের পাতিল, মাটির ব্যাংক, হরিণ, গরু, ঘোড়া, হাতি, খরগোশ, উটপাখি, হাঁস, বক, টিয়াসহ নানা ধরনের প্রাণীর আকৃতি তৈরি করেছি।”