নানান সমস্যায় জর্জারিত বর্তমানের কৃষি
শ্যামনগর সাতক্ষীরা থেকে ফজলূল হক
বারসিক’র সহযোগিতায় সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদরের জেয়ালা গ্রামের এমদাদুল হকের বাড়িতে ‘কৃষি জমি ও মাটির স্বাস্থ্য এবং বর্তমান সমস্যা ও অবস্থা’ সর্ম্পকে জানা ও জানানো জন্য আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় ২৩ জন নারী ও ২ জন পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। তাদের কাছ থেকে একে অপরের কথপোকথনের মাধ্যমে কৃষি জমি ও মাটির স্বাস্থ্য সর্ম্পকে আনুমানিক ২০ বছর পূর্বের ও বর্তমান সময়ের বিভিন্ন বিষয় সর্ম্পকে জানার চেষ্টা করা হয়। বর্মানে জলাবদ্ধতা, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, লবণাক্ততা চারিদিক থেকে নানান সমস্যায় জর্জারিত বর্তমানের কৃষি এমন কথা বলছিলেন জেয়ালা গ্রামের মানুষ।
আলোচনা সভায় জেয়ালা গ্রামের কৃষি পরামর্শক নামে খ্যাত এমদাদুল হক বলেন, ‘আগের যে কৃষি আমরা দেখেছি, সেই কৃষি আজ আর নাই। আগে কৃষি জমির মাটি ভালো এবং উর্বরতা ছিল, সেটা বর্তমানে আর নাই। আগের জমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতা এতো ভালো ছিল বছরে দুইটা থেকে তিনটা ফসল হতো। আর এখন বছরে একটি ফসল ফলানো খুবই কষ্টকর, বেশি দেখা যাই ধান, কচু, লাউ, সীম, কুমড়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাটিরর স্বাস্থ্য শক্তি দুটোই খুবই খারাপ অবস্থায়। আমরা আগে জৈব, গোবর সার, হাঁস মুরগির বিষ্ঠা, ময়লা আর্বজানা ব্যবহার করতাম আর এখন রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ছড়াছড়ি।’
জেয়ালা গ্রামের শাহানারা বলেন, ‘আগে কতই না উপকারী পোকামাকড় ছিল কিন্তু রাসায়নিকের কারণে উপকারী পোকামাকড় নেই বললেই চলে। আগে বাড়ির চারপাশে যে জায়গায় খুড়তাম সেখানেই কেঁচো পাওয়া যেত কিন্তু সব জমিতে পাওয়া যায় না, যেখানের মাটিতে ময়লা আর্বজানা বেশি থাকে সেই সব স্থানে খুবই কম দেখা যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহারের কারণে মাটির উর্বরতাশক্তি কমার জন্য কোঁচো খুবই কম, কেঁচো না থাকার কারণে আগের মত জমিতে ভালো ফসল হয় না। আমাদের গ্রামটা বর্তমানে জলাবদ্ধতা জর্জরিত। বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতার কারণে লবণ খুবই কম পরিলক্ষিত হয় তবে পানি কমে গেলে মাটি শুকায় গেলে জমিতে ধুলাধুলা উঠে।’
আলোচনা সভায় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে বেতনা নদী খনন, জমির ভেতরের খালগুলো খননসহ দখল মুক্ত করে জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্ত পাওয়া যাবে এবং রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার করতে হবে ও কৃষি জমিতে লবণ পানির প্রবেশ বন্ধ করতে পারলে কৃষি জমি, মাটি সব ঠিক থাকবে বলে মনে করছেন জোয়ালা গ্রামের কৃষাণ ও কৃষাণীরা।