নেত্রকোনায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে যুব সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত

নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
বাতাসে বাড়ছে কার্বন দূষণ। পৃথিবী গরম হচ্ছে। বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাম নগর পাহাড়ের মানুষ। প্রায় প্রতিবছরই এ অঞ্চলের আগাম বন্য, আকষ্মিক বন্যা, খরা, ঘুর্ণিঝড়, টর্নেডো, শীলাবৃষ্টি, ঠান্ডা, কুয়াশা বজ্রপাত, হট ইনজুরি, কোল্ড ইনজুরি, ধানে ছিটা, ক্ষতির সন্মূখীন হন গ্রামের মানুষ। আমাদের চারদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা সংকট তৈরী হচ্ছে, চোখ ধাধাঁনো চাকচিক্যে, ভোগবিসালের জীবন যাপনের অভ্যস্ততায় আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ। বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণের বৈচিত্র্য, জলাভূমিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ। চারদিকে অসঙ্গতির ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলে কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। এই পরিবর্তনের উলটাপালটা পরিস্থিতি ও ক্ষয় থেকে বার বার ঘুরে দাঁড়ায় তরুণ প্রজন্ম, জাগিয়ে রাখে পরিবার, সমাজ ও দেশ। বাঁচিয়ে রাখে মানবিকতা, বৈচিত্র্য ও সভ্যতা। মানুষেই সভ্যতা গড়ে আবার মানুষই সভ্যতা ধ্বংস করে।


নেত্রকোণার যুবসমাজ এসব বিষয়কে সামনে রেখে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি নিয়ে আয়োজন করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সাইকেল র‌্যালি, সাইক্লিং ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ স্লোগানে নেত্রকোনায় সাইকেল র‌্যালি শুরু করে নেত্রকোণা সম্মিলিত যুবসমাজ। জেলা শহরের ছোট বাজার স্থানীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে র‌্যালিটি শুরু হয় এবং র‌্যালিটি শেষ হয় মগড়া নদীর উৎসস্থল ত্রিমোহনীর বধ্যভূমিতে। র‌্যালিটি উদ্বোধন করেন প্রেসক্লাব সম্পাদক ও প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, গবেষক লেখক আকন্দ সোহরাব উদ্দিন ও শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপ্রধান ও আবু আব্বাস কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার।

১৫ জন তরুণ বিভিন্ন যাওয়ার পথে বাজারে দাঁড়িয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ পথসভার মাধ্যমে। তাদের বুকে ঝুলানো প্ল্যাকার্ডে রয়েছে নানা বার্তা। শহরের মধ্য দিয়ে রেলক্রসিং বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও পথে পথে সচেতনতা বার্তা দিয়ে পুর্বধলা সড়কের রৌহা ইউনিয়নের ত্রিমোহনী মগড়া নদীর উৎপত্তিস্থল এলাকায় শেষ হয় এই অভিনব প্রচারণা। আয়োজকরা জানান, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারা বিশ্ব আজ আক্রান্ত। তার মধ্যে নেত্রকোনার মতো নিম্নাঞ্চলগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এটির জন্য দায়ী আমরা মানুষ। তবে বাংলাদেশের মানুষ গ্রামের মানুষ দায়ী নয়। ধনী দেশের মানুষ যারা ভোগ বিলাসের মাধ্যমে জীবনযাপন করেন। তারাই অধিক কার্বন বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। এই বার্তা নেত্রকোনার মানুষ অর্থাৎ তরুদের কাছে পৌঁছে দিতে সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করছি।’
জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দায়ী, সেটি তুলে ধরে এবং প্রতিবাদ করে তরুণদের এবং নেত্রকোনার মানুষদের সচেতন করাই মূল লক্ষ্য বলে জানান সম্মিলিত যুব সমাজের সভাপতি পার্থ প্রতিম সরকার।


নেত্রকোনা আবু আব্বাস ডিগ্রি কলেজের জীব বিজ্ঞানের অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার জানান, নেত্রকোনার যুব সমাজ এবং আমরা কিছু পরিবেশকর্মী সাধারণ মানুষের কাছে পরিবেশ রক্ষার আওয়াজটা পৌঁছে দিতে চাই। আমরা বৃক্ষ নিধন করছি, গাছ কেটে ফেলছি, মাছের ভ্রুণসহ মেরে ফেলছি। এর জন্য নিজেরা কিভাবে দায়ী এটিও পৌঁছে দিতে সাধারণ মানুষের কাছে এটা একটা বড় পথ বলে মনে করি।’


বারসিকের প্রতিনিধি আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান বলেন, ‘এই সভ্যতা মানুষেই গড়েছে আবার মানুষের কর্মকান্ডের কারণেই ধ্বংস হচ্ছে। আওলাদ হোসেন রনি জানান, ‘বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ুর সর্বোচ্চ ঝুঁকির একটি দেশ। পানীয় জলের সংকট নেত্রকোনা অঞ্চলের মধ্যে বেশি। তাই জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য এই প্রচারণা।

happy wheels 2

Comments