পশু হাসপাতালে যামু ও সরকারি সেবা নিমু
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে বিউটি সরকার
সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের অধিকাংশ মানুষই তাদের বাড়িতে হাঁস মুরগি, গরু এবং ছাগল লালনপালন করেন। পশুসম্পদ পালনের মাধ্যমে তারা সংসারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সচল করেন এবং পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদাও পূরণ করার চেষ্টা করেন। তবে মাঝে মাঝে এসব পশুসম্পদের বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এতে করে পশুসম্পদ পালনে কৃষকরা সমস্যায় পড়েন। অনেকসময় গ্রাম্য ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এসব পশুসম্পদ মারা যায় এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় পরিবারগুলোকে।
এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সম্প্রতি বায়রা একতা কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ও বারসিক’র সহায়তায় প্রাণী সম্পদের রোগ নিরাময় ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এ প্রশিক্ষণে কৃষক সংগঠনের সদস্যরা ছাড়া ও বায়রা গ্রামের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন। উক্ত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসাবে ছিলেন সিংগাইর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ফারুখ আহম্মদ এবং বারসিক প্রোগাম অফিসার মো. মাসুদুর রহমান।
কার্যক্রমের শুরুতে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ফারুখ আহমেদ হাঁস, মুরগি ও গরু ছাগলের বিভিন্ন রোগের বর্ণনা দেন। শুরুতে তিনি মুরগির খাবার সর্ম্পকে বলেন, ‘মুরগির ডিমের মধ্যে প্রোটিন থাকে। তাই মুরগিকে প্রোটিন জাতীয় খাবার দিতে হবে। মুরগিকে সকালে নয় সন্ধ্যায় উমে বসাতে হবে এবং ২১দিন পর বাচ্চা ফুটলে ২৫ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত বাচ্চাকে আলাদা করে পলো দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।’ মুরগির অসুখ হলে প্রাণী সম্পদে যোগাযোগ করার এবং ভ্যাকসিন আনার জন্য সাথে ফ্লাক্স নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। ছাগলের শরীর ফুলে যাওয়া ও মাথা নীচু করে থাকার নিরাময় করার জন্য আদার রস করে লবণের সাথে মিশিয়ে ৭ দিন খাওয়ানো এবং কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। উপস্থিত সবাইকে মো. ফারুখ আহমেদ গবাদি পশুর রোগের চিকিৎসার জন্য প্রাণীসম্পদে যোগাযোগ করা ও সরকারি সেবা গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। তিনি মনে করেন এতে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে এবং খরচ কম হবে।
বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার মো. মাসুদুর রহমান গরুর ৩টি রোগ যেমন গলা ফোলা, ক্ষুরা এবং তরকার বর্ণনা প্রদান করেন এবং এ রোগ হলে কি করণীয় সে সর্ম্পকে আলোচনা করেন। তরকা রোগের নিরাময়ের জন্য ইনডেক্স ট্যাবলেট এবং ভিটামিন এ্যানোরা ট্যাবলেট প্রতিদিন একটা করে এক মাস খাওয়ানো ও ক্ষুরা রোগ হলে ক্ষতস্থানে তারপিন তেল দিযে ধুয়ে নেবানল ঔষুধ দেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া গলাফোলা রোগের জন্য টিউবয়েলের পানি গরম করে খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা এখন সবাই হাঁস, মুরগি ও গবাদি পশুর রোগ হলে পশু হাসপাতালে যামু ও সরকারি সেবা নিমু এবং অন্যদেরকেও পরামর্শ দিমু।’