দোকানের আয় থেকে চলে কাজল বেগমের সংসার

সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল

বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করে আর্থিকভাবে লাভের মুখ দেখেছেন কাজল বেগম। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় এবং পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে নিজেদের অভিযোজন করে টিকে থাকার নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন উপকূলীয় এলাকার পেশাজীবী জনগোষ্ঠী। তেমনই এক স্বপ্নপ্রত্যয়ী নারী কাজল বেগম। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলবাড়ী গ্রামে বাস করেন কাজল বেগম।

বিয়ের পর স্বামীর সংসারে এসে অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে দিন চলে তাদের। ২ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এক ছেলে ও এক নাতিসহ স্বামী স্ত্রী মিলে ৪ সদস্যের ছোট সংসার তাঁর। কলবাড়ী বাজারে একটি চা বিস্কুটের দোকান রয়েছে তাদের।

২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ্ পার্টনারশিপ ফর ডেভেলপমেন্ট জাস্টিস’র সহযোগিতায় বারসিক’র বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলবাড়ী গ্রামে দোয়েল সিএসও দলে যুক্ত হন কাজল বেগম (৫৬)। যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক দলীয় আলোচনায় সভায় অংশগ্রহণ করেন। দলে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে তার পারিবারিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল সম্পদ হিসেবে চায়ের দোকানের মালামাল সহযোগিতা পান। একই সাথে পরিবেশ প্রকল্প থেকে তাকে একই সাথে একটি কদবেল ও সবেদার চারা, কিছু বর্ষাকালীন বীজ ও ৩টি মুরগি সহযোগিতা পান।


এরপর কাজল বেগম বারসিক’র নিয়মিত আলোচনা, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহযোগিতায় তাঁর সম্পদকে ভালোভাবে দেখাশুনা ও লালন পালনের পাশাপাশি চায়ের দোকানটি ভালোভাবে পরিচালনা করতে থাকেন। তার একমাত্র ছেলে এলাকায় মাঝে মাঝে দিনমজুরি দিয়ে আয় করেন এবং তার স্বামী দীন আলীও (৬৩) বাজারের চায়ের দোকানটি ভালোভাবে পরিচালনা করেন।

মূলত দোকানের এই আয় থেকে তাদের সংসার চলে। দোকানে বিভিন্ন কোম্পানির লোকেরা বিস্কুট, কেক, চানাচুরসহ অন্যান্য মালামাল দিয়ে যায়। আর চা চিনি স্থানীয় মুদি দোকান থেকে নিয়মিতভাবে দোকানের বিক্রি থেকে ক্রয় করেন। এভাবেই স্বামী স্ত্রী দুজন মিলে চায়ের দোকানটি পরিচালনা করে ভালো আয় করতে পারেন।

এভাবেই চলমান চায়ের দোকান এর মাধ্যমে তার পারিবারিক আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজল বেগম বলেন, ‘আমার চায়ের দোকানে প্রতিদিন প্রায় ২০০ টাকা আয় হয়। এই দোকানের আয় থেকে সংসার চালাচ্ছি, নাতিকে লেখাপড়া করাচ্ছি, সঞ্চয় করছি এবং দোকানটিকে আরো বড় করার পরিকল্পনা করছি।’

কাজল-দীন আলী দম্পতি নিজেদের পরিশ্রম আর প্রচেষ্টায় নিজের চায়ের দোকানের ব্যবসাটাকে আরো বড় করার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে চলেছে। সঠিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, সাহস ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে কাজল বেগম যেভাবে এগিয়ে চলেছে তার মাধ্যমে পারিবারিক উন্নয়নের পাশপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।

happy wheels 2

Comments