সবুরা খাতুনের দিন বদলের গল্প

সাতক্ষীরা থেকে মুকুন্দ ঘোষ

বাংলাদেশের উপকুলবর্তী সাতক্ষীরা জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ইউনিয়নের নারী সবুরা খাতুন (৬৫)। সাত ভাই বোনের বড় সবুরা খাতুন। বাবা আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় কিন্তু বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামী রেখে চালে যায়। সবুরা খাতুনের গর্ভে তখন ৭ মাসের সন্তান, সেই সময় থেকে সবুরা খাতুনের কপাল পুড়তে থাকে। শেষমেশ চলে আসতে হয় বাপের ভিটায়। সন্তান জন্মের পরে অনেক কষ্টে দিনমজুরের কাজ করে কাটতে থাকে তার দিনগুলো। তার সংসারে এখন ৫ জন সদস্য। ছেলে মোকারাম (৪৫) দিনমুজুরে কাজ করেন কিন্তু সবুরার কপাল এখানেও খারাপ কারণ ছেলে একটু এ্যাবনরমাল (বিশেষভাবে সক্ষম)। সংসারে ছেলের বউ এক নাতি নাতনি। সবমিলে এ অনেক কষ্টে চলে সবুরাদের সংসার।

২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডিভেলপমেন্ট জাস্টিস এরসহযোগিতায় বারসিক’র বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে গাবুরা ইউনিয়নের পূর্ব ডুমুরিয়া গ্রামে দোবেকি সিএসও দলে যুক্ত হয় সবুরা খাতুন। দলে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে তার পারিবারিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সেই সময় তিনি বলেন, ‘আমি ভেড়া পালন করতে চাই। যার প্রেক্ষিতে মূল সম্পদ হিসাবে ৩টি ভেড়া সহযোগিতা করা হয়। পরিবেশ প্রকল্প থেকে একই সাথে দুইটা ফলের চারা (কদবেল ও সবেদা) কিছু বীজ ও ৪টি হাঁস সহযোগিতা করা হয়।

সবুরা খাতুন বলেন, “বারসিকের নিয়মিত সাপ্তাহিক মিটিং প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ পেয়ে নিজের সম্পদের (ভেড়া পালন) প্রতি বেশি যত্নশীন হই।’ সবুরা খাতুনের ৩টি ভেড়া থেকে এখন ৯টি ভেড়ার মালিক। এছাড়াও তার বাড়িতে ১০টি হাঁস আছে এবং বসতভিটায় সীমিত জায়গাতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে নিজের পরিবারের কিছুটা পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে থাকে।

সবুরা খাতুন এখন সপ্ন বুনছে এখান থেকে ৪টি ভেড়া বিক্রয় করে নিজের বসত বাড়িটা ঠিক করবে। এমন স্বপ্নের কথা জানালেন সবুরা খাতুন। সবুরা খাতুনের দুর্দিনে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প পাশে দাঁড়ানোর জন্য বারসিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

happy wheels 2

Comments