শ্যামনগরের পদ্মপুকুরের লবণাক্ত এলাকায় ট্রাইকো-কম্পোষ্ট তৈরির উদ্যোগ
শ্যামনগর থেকে পার্থ সারথী পাল
মাটিতে বসবাসকারী গাছের জন্য উপকারী একটি ছত্রাক ট্রাইকোডার্মা (Trichoderma harzianum) ব্যবহার করে কম্পোষ্ট সার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ইউনিয়নের কামালকাটি গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম।
বাংলাদেশের মধ্য অন্যতম দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এ এলাকার প্রধান সমস্যা মাটি ও পানির লবণাক্ততা। এখানকায় কৃষি কাজের উপযোগী জমি খুবই কম। এছাড়া মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও জৈব পদার্থ কম থাকায় ফসলের উৎপাদন কম হয়। এখানে গবাদিপশু খুব কম পালন হয়। এজন্য গোবর সারও তেমন পাওয়া যায় না, যেটুকু পাওয়া যায় চিংড়ি ঘেরে ব্যবহার হয়।
গত ৬ জানুয়ারি রেজাউল ইসলামের বাড়িতে ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। উপকরণ হিসাবে ছাগলের নাদি, মুরগির বিষ্ঠা, তরকারীর খোসা, নিমের পাতা এবং ছাই ব্যাবহার করা হয়। উপকরণগুলো ভালোভাবে পানি দিয়ে মিশিয়ে তার ভেতর ট্রাইকোডার্মা পাউডার পানিতে গুলে স্প্রে করা হয়। দুই লিটার পানির সাথে ৫০ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা পাউডার ব্যাবহার করা হয়। দুই হাত বাই দুই হাত গর্ত করে তার ভেতর পলিথিন দিয়ে মিশ্রিত উপকরনগুলো ঢালা হয়। এরপর উপরে শুকনা ঘাস এবং কলাগাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। মাঝে মাঝে এখানে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হবে এবং মিশ্রণটি লাঠি দিয়ে উলটপালট করে দিতে হবে।
আশা করা হচ্ছে আগামী এক মাসের ভেতর মিশ্রণটি একটি উত্তম জৈব সারে পরিণত হবে। এই সারটি একসাথে যেমন সার হিসেবে কাজ করবে তেমনই জৈব কীটনাশক হিসাবেও কাজ করবে। আগামীতে এ সার ব্যবহার করে একটি পরীক্ষামূলক সবজি প্লট করা হবে যেখানে এর কার্যকারিতা দেখা হবে।
সার তৈরির এ প্রক্রিয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন এলাকার সাবেক ইউপি মেম্বার মো. আশরাফ হোসেন, পাশবর্তী তিনজন কৃষাণী এবং কৃষককের স্ত্রী। বারসিক কর্মী মফিজুর রহমান এবং পার্থ সারথী পাল এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন।