শ্যামনগরে আজাবা শাকের মেলা অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরা, শ্যামনগর থেকে বিশ^জিৎ মন্ডল
বারসিক’র উদ্যোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের কাচড়াহাটি গ্রামের স্থানীয় জনগোষ্টীর সহায়তায় কৃষাণী সুমিত্রা রানীর বাড়িতে সম্প্রতি (২৮ মার্চ) অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ব্যবহার, সম্প্রসারণ এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে এক পাড়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী, কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসে প্রায় ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন। মেলায় ১৮ জন গ্রামীণ নারী নিজ এলাকা বিভিন্ন স্থান থেকে ১২২ ধরনের অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে নিয়ে প্রদর্শনী করেন। প্রদর্শনীতে এ সকল উদ্ভিদের প্রাপ্তিস্থান, গুণাবলী, ব্যবহার, কোন মৌসুমে বেশি পাওয়া যায়, কোনটি কি দিয়ে রান্না করা হয় এসব বিষয় তুলে ধরেন প্রদর্শনকারীরা।
মেলায় অংশগ্রহণকারী বলেন, ‘এটি একটি ভিন্ন মেলা। আমাদের এলাকায় যে এতো ধরনের উদ্ভিদ বৈচিত্র্য আছে তা এই মেলার মাধ্যমে এক জায়গায় দেখতে পেলাম। সাথে সাথে এগুলোর গুণাবলী সম্পর্কে যেমন জানতে পাললাম, তেমনিভাবে আমাদের ছেলে মেয়েরাও জানতে পেরেছে। আজকের এ আজাবা শাকের মেলার মাধ্যমে। এগুলো টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে।’
ইউপি সদস্য কুলসুম বলেন, ‘আমরা উপকূল এলাকার মানুষ। এখানে লবণাক্ততার মাত্রা বেশি। তারপরও অসংখ্য প্রাণবৈচিত্র্য এখনো টিকে আছে আমাদের এলাকায়। আর এরকম মেলা আরো বেশি বেশি করে আয়োজন করা দরকার। তাহলে সকলেই এর ব্যবহার ও গুণাবলী সম্পর্কে সচেতন হবে এবং প্রাণবৈচিত্র্য টিকে থাকবে।’
মেলায় এককভাবে ১২২ প্রকার উদ্ভিদ প্রদর্শনী করে প্রথম হন বাসন্তী রানী। ৮৫টি উদ্ভিদের প্রদর্শন করে ২য় হন শীলা রানী এবং ৬৮টি নানান প্রজাতির উদ্ভিদ প্রদর্শন করে ৩য় হন লক্ষ্মী রানী।
মেলায় অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য কুলসুম, উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, সিডিও ইয়থ টিমের মিলন, সাংবাদিক অনাথ মন্ডল ,বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল, বিশ্বজিৎ মন্ডল, গাজী আল ইমরান ও বিধান মধুসহ প্রমুখ।