ঘুর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তী বারসিক কর্মএলাকা পরিদর্শন
সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল
ডিয়াকোনিয়া প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তী বারসিক কর্মএলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে গতকাল। প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, রমজাননগর ও কৈখালী ইউনিয়নের সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় অধিকাংশ মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে একাকার হয়েছে। গাছ-গাছালি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বারসিক শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে স্থানীয়দের সাথে কাজ করে। ঘুর্ণিঝড় বুলবুল তাদের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি ও সমস্যা দেখা দেয়। দুর্যোগ পরবর্তী স্থানীয় উদ্যোগ ও দুর্যোগের চিত্র পরিদর্শন এবং স্থানীয় যুব ও নারী পুরুষের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে ডিয়াকোনিয়ার দেশীয় প্রধান খোদেজা সুলতানা লোপা ও বারসিক পরিচালক পাভেল পার্থ শ্যামনগর পরিদর্শনে আসেন।
তাঁরা ১১ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় শ্যামনগরের কলবাড়ী পৌছান। পরদিন সকালে বারসিক স্টাফদের সাথে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সেখানে বারসিক এর এলাকা সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল কর্মএলাকার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এবং স্থানীয়দের চাহিদা তুলে ধরেন। পরে সিডিও এর বুড়িগোয়ালিনী অফিস পরিদর্শন ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগ পর্যবেক্ষণ শেষে চেয়ারম্যান মহোদয় এর সাথে এক চা চক্রে মিলিত হন। এ সময় চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরেন এবং এই মুহুর্তে দুর্গত মানুষের সহায়তা করে পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানান।
এর পর তাঁরা বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। এসময় সিডিও, এসএসএসটি, ব্যারাকের স্থানীয় জনগোষ্ঠী, ইউপি সদস্য মলিনা রানী, দেলোয়ারা বেগম, বনজীবি শেফালী বিবিসহ সরাসরি দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী যুব ও নারীদের সাথে কথা বলেন। এসময় তারা দুর্যোগের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
এরপর তাঁরা পদ্মপুকুর ইউনিয়নের কামালকাঠি গ্রামের কামালকাটি একতা যুব সংঘ প্রাঙ্গণে আরো একটি আলোচনা সভায় মিলিত হয়। তারা নদীর বাঁধ সুরক্ষার স্থানীয় জনউদ্যোগের অভিজ্ঞতার বয়ান ব্যক্ত করেন। উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড আতাউর রহমান মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানান।
স্থানীয়দের সাথে আলোচনায় জানা যায়, এই সময়ে সুপেয় পানির পুকুর সংস্কার, বাথরুম মেরামত, বীজ বৈচিত্র্য সহায়তা, বনায়ন, বসতঘর সংস্কার, হাস মুরগি সহায়তা, স্যানিটারী ন্যাপকিন ও শিশুদের শিক্ষা উপকরণ ও নদীর বাঁধ সুরক্ষাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন জরুরি। তাহলেই উপকূলীয় জীবন জীবিকা স্বাভাবিক হতে অনেকটা সহায়ক হবে।