সহায়তা পেয়ে বেঁচে থাকার শক্তি ও সাহস বেড়ে গেছে

সাতক্ষীরার, শ্যামনগর থেকে বিশ^জিৎ মন্ডল
‘আমার যে রোগ হয়েছে তাতে যে আর কতদিন বাঁচবো তা বলতে পারছিনা। আমরা সবাই যানি যে জন্ম নিলেই মরতে হবে কেউ আগে বা পরে। কিন্তু আমার যে রোগ এখানে যেমন কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে তেমনি সংসারের আয় রোজগারের সবটুকু চিকিৎসার কাজে ব্যয় করতে হচ্ছে। শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য নানান চেষ্টা করছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে এ রোগটির সাথে মোকাবেলা করে টিকে আছি। জানিনা আর কতদিন এভাবে চলবে। প্রায় ৫ বছর ধরে সরকারি এ সেবাটি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। প্রতিবছর সমাজসেবা অফিসে এসে যোগাযোগ করলেই বলতো এবার হবে আর সেই আসাতেই ৫ বছর কেটে গেলো। আর এই ৫ বছরের চিকিৎসার জন্য গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি, জমি, নিজের গহনা বিক্রি করে চিকিৎসা চালিয়ে এসেছি। সর্বশেষ চলতি বছর আমাদের গ্রামের কাঠালবাড়ি কৃষি নারী সংগঠনের মাধ্যমে বারসিক অফিসে যোগাযোগ করি এবং বারসিক কর্মকর্তাদের সহায়তায় আমার নামটি সরকারি এ সহায়তায় রাখার জন্য আমি আমার স্বামী ও নারী সংগঠনের সভানেত্রী বারংবার যোগাযোগ করি। বারসিক থেকে আমার নামটি তালিকায় রাখার জন্য সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে এবং তারা বলে যে এবছর আপনার নামটি থাকবে কোন চিন্তা করেন না। তাদের কথা শুনে আশ^স্ত হই এবং চুড়ান্ত নামের তালিকায় আমার নামটি থাকে। এটি যে আমার কি উপকারে আসবে তা বলে শেষ করতে পারছিনা। আর কিছুদিন হয়তোবা বেঁচে থাকতে পারবো।’


উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের কাঠালবাড়ি গ্রামের ক্যান্সার আক্রান্ত কৃষাণী ছকিনা বেগম।’ সম্পতি সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক শ্যামনগর উপজেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবাযনের আওতায় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় শ্যামনগর উপজেলায় ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্টোকে প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগে আত্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তায় চেক গ্রহণ পরবর্তী সময়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।


উল্লেখ্য শ্যামনগর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৪০ জন অসুস্থ্য রোগীকে ৫০ হাজার টাকার চেক এবং বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার বই বিতরণ করেন উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর। উক্ত অনুষ্ঠানে সমাজ সেবা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাইল হক দোলন, ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুজামান সাইদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আয়ুব ডলি এবং সভাপতি হিসাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।


প্রত্যেক রাষ্ট্রে নাগরিকের সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আর এ সেবা সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করা দরকার। সরকারি-বেসরকারিভাবে নানান সেবা আছে আর সেবা সম্পর্কে এখনো অধিকাংশই মানুষের ধারণা কম। কোথায় গেলে, কিভাবে যোগাযোগ করলে, কার মাধ্যমে যোগাযোগ করলে সেবা পাওয়া যাবে তা নিয়ে আছে নানান সমস্যা। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য পারস্পারিক, গ্রাম ও সংগঠন পর্যায়ে আলোচনা, সরকারি সেবা সম্পর্কে ধারণাসহ তথ্য জনগোষ্ঠীর কাছে পৌছে দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্র্ণ।

happy wheels 2

Comments