উন্নয়ন উদ্যোগে চাই সমন্বিত জনপরিকল্পনা
সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল
বারসিক দীর্ঘদিন ধরে লোকায়ত জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে এলাকার প্রাণবৈচিত্র্য, কৃষি, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, জেন্ডার সমতা, গ্রামীণ জীবনযাত্রা ও প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার সুরক্ষার ভেতর দিয়ে সমন্বিত উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বারসিক দেশের উপকূলীয় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে ‘জননেতৃত্বে উন্নয়ন কর্মসূচি’ প্রকল্পের ‘প্রকল্প পর্যালোচনা এবং পরিকল্পনা বিষয়ক’ কর্মশালা আয়োজন করেছে সম্প্রতি।
পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য, দূর্যোগ, জেন্ডার, শিক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য এই ৮টি ইস্যুভিত্তিক সমন্বিত এবং অংশগ্রহণমূলক কর্মপরিকল্পনা তৈরির প্রথম পর্যায়ে সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলা এবং শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম পেশাজীবী জনগোষ্ঠী এবং ১৮টি স্থানীয় জনসংগঠনের নিকট থেকে এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে আনা হয়। এরপর সেই সমস্যা ও সমাধানের উপায় নিয়ে স্থানীয় পেশাজীবি জনগোষ্ঠী, স্থানীয় সরকার, সাংবাদিক ও সরকারী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করা হয়।
স্থানীয় মানুষ, প্রাণ, প্রকৃতি ও বৈচিত্র্যের নানবিধ সমস্যা ও সমাধানের উপায় এবং সে আঙ্গিকে কি কি ধরনের কর্মপ্রক্রিয়া হতে পারে প্রকল্প পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা করা হয়। উপকূলীয় এলাকার সমাজ, পরিবেশ, প্রতিবেশ, বৈচিত্র্য ও জীবন, জীবিকার মানউন্নয়ন তথা সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সামনে নিয়ে স্থানীয় পেশাজীবী মানুষ এবং স্থানীয় সরকার, সাংবাদিক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ তাঁদের মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহনকারীবৃন্দ আলোচনায় বলেন, “বারসিক উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করে না, এলাকার স্থানীয়দের নানাবিধ সমস্যা ও সমাধানের উপায় নিয়ে যে জনপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সেটা অবশ্যই সরকারের স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। এলাকার মানুষেরা দূর্যোগকে মোকাবেলা করেই বেঁচে থাকে। পরিবর্তির পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিয়ে সবাইকে একসাথে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। তবেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।”
বারসিক স্বপ্ন দেখে এক বৈচিত্র্যময়, আন্তঃনির্ভরশীল বহুত্ববাদী সমাজ। যার মাধ্যমেই ত্বরান্বিত হবে উপকূলীয় জনপদ তথা বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। আর এ কারণেই উপকূলীয় নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষ, স্থানীয় জনগোষ্ঠী, স্থানীয় সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও মিডিয়াকে সমন্বয় করে সমন্বিত পরিকল্পণা গ্রহণ করা হয়। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে স্থানীয়দের আগামীর স্বপ্ন, যার মাধ্যমে রচিত হবে পারস্পারিক নির্ভরশীলতায় একটি শ্রদ্ধাশীল সমাজ।