প্রবীণরা সমাজ ও পরিবারের বোঝা নয়, সম্পদ
ঢাকা থেকে ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল:
প্রবীণরা সমাজ ও পরিবারের বোঝা নয়, সম্পদ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে বিশ্ব প্রবীণ দিবসের র্যালী ও আলোচনা সভায় বক্তারা। আজ আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষ্যে গত ১ অক্টোবর ৪টায় বারসিক ও শহর সমাজসেবা কার্যালয় -৬ মোহাম্মদপুরের উদ্যোগে র্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকনেতা জামাল হায়দার মুকুলের সভাপতিত্বে ও ফেরদৌস আহমেদের সঞ্চালনায় র্যালী পরবর্তী সমাবেশ বক্তব্য রাখেন শহর সমাজসেবা কার্যালয়, মোহাম্মদপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম শহিদুজ্জামান, জাপান গার্ডেন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, বারসিকের সমন্বয়ক মো: জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ্বাস প্রমূখ।
বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের সমাজের প্রবীণ জনগোষ্ঠী প্রায়সই লোকচক্ষর আড়ালে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থেকে যায়। অথচ বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে এই প্রবীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্রতা দূরীকরণের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়ন খুব জরুরী। রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারে রয়েছে প্রবীণদের অমূল্য অবদান। তাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও কর্মময়তা সব সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক। কিন্তু সকল দেশে সকল সমাজের প্রবীণদের প্রতি রয়েছে এক ধরনের সামাজিক অবহেলা। এই অবহেলাকে বিবেচনা করে এই সমস্যা থেকে উত্তোরনের জন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯০ সালে ১রা অক্টোবরকে আন্তর্জাতীক প্রকবীন দিবস ঘোষণা করা হয়। যা ১৯৯১ সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশে আন্তর্জাতিক প্রবীন দিবসটি যথাযোগ্য ময়াদায় পালন করে আসছে। এরা ধারাবাহিকতায় এই বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “ বয়সের সমতার পথে যাত্রা”।
সমাবেশে সমাজসেবা কর্র্মকর্তা বলেন, সমাজে প্রবীণরা কখনই বোঝা নয়। প্রবীণদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার উপর দায়িয়ে নবীণরা নতুন সমাজ ও দেশ গঠন করে। আজকের নবীণরাও কোন একদিন প্রবীণ হবেন। তাই প্রবীণদের প্রতি আমাদের সকলের সংবেদনশীলতা দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের প্রতি আমাদের প্রকৃত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সমাবেশের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জামাল হায়দার মুকুল বলেন, আমি ৫৪ নির্বাচন করেছি, অংশগ্রহণ করেছি মুক্তিযুদ্ধে। তাই আজকের এই সমাবেশ আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি গর্বিত যে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন প্রবীণ মানুষ হিসেবে এখানে উপস্থিত হতে পেরে। আমার প্রত্যাশা হলো নবীণরা প্রবীণদের সাথে আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করবে কারণ প্রবীণদের অভিজ্ঞতার উপরই সমাজটা টিকে আছে।
আন্তর্জাতিক প্রবীন দিবসে প্রবীনদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের আহবান জানিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যালি ও আলোচনা অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনগণসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা। সচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান সংবলিত ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশগ্রহন করেন মোহাম্মদপুর পাওনিয়ার হাউজিং সোসাইটির নি¤œ আয়ের বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ, সমাজ সেবা অধিদপ্তদের কর্মকতা-কর্মচারীগন, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি ও বিভিন্ন এনজিও ও সংগঠনের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।