জলবায়ু ন্যায্যাতার দাবি নিয়ে জাতীয় যুব দিবস পালিত

যুব সংগঠক—পার্থ প্রথিম সরকার
জাতীয় যুবদিবস। ২০২২। এ বছরের প্রতিপাদ্য: প্রশিক্ষিত যুব, উন্নত দেশ। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
জলবায়ু পরিবর্তন ও সংকট। চারদিকে দুর্যোগ, অসহিষ্ণু আর ক্ষয়, তখন বারবার ঘুরে দাঁড়ায় যুবসমাজ। জাগিয়ে রাখে পরিবার সমাজ ও দেশ। বাঁচিয়ে রাখে মানবিকতা, বৈচিত্র্য ও সভ্যতা। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযোদ্ধ, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, দেশের সংকটে এই যুবসমাজই বারবার আগলে নিয়েছে বাংলার মুখ। দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে ও বারসিকের সহযোগিতায় নেত্রকোণা জেলা যুব উন্নয়ন আঞ্চলিক কার্যালয়ের মিলনায়তন সাকুয়ায় আলোচনা, পরিচ্ছন্ন অভিযান, যুব সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে দিবটি পালন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনির হোসেন। বিশেষ অতিথি মো: ফখরুল আলম জুয়েল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নেত্রকোণা, প্রেসক্লাব সম্পাদক মুখলেছুর রহমান খান, পৌরসভার প্যানেল মেয়র জনাব মোহসিন আলম, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন হারুণ অর রশিদ, উপ-পরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, নেত্রকোণা।

আলোচনায় বক্তারা জানান, যুবসমাজ যে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে, সেটা আন্তর্জাতিক মানের হয়না। যুবদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদান জরুরি। দেশের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যুবদের প্রশিক্ষিত করে অনেক সমস্যার সমাধান করছে। দেশের নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দেওয়া দিচ্ছে। আমাদের পাশের দেশগুলোতে ইয়ুথ কাউন্সিল আছে। যেখানে যুবরা তাঁদের দাবি তুলে ধরতে পারেন। আমাদের দেশের যুবরা তা করছেনা। তারা আরও জানান, আমাদের সব জায়গাতেই যুবসমাজ ছড়িয়ে আছে। আদিবাসী, প্রত্যন্ত অঞ্চল প্রতিবন্ধি, দলিত শ্রেণী, তৃতীয় লিঙ্গসহ অন্যান্য যুবসমাজ আমাদের জন্য এখনো পুরোপুরি সম্পদ হতে পারেনি। জাতীয় বাজেট অনুসারে ২৩টি মন্ত্রণালয় যুবদের সঙ্গে যুক্ত। শুধু বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করলেই হবে না। মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই সঠিক প্রকল্প নিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে যুবদের জন্য সুপারিশমালা আলোচনা সভায় তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো নি¤œরূপ
১। বাজেট প্রনয়ণে যুবদের মতামত নিতে হবে
২। জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যুবদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে
৩। জাতীয় বাজেটে যুবদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে
৪। যুবদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে
৫। যুবদের সঙ্গে পরামর্শ করে যুব বাজেট ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করা জরুরি
৬। প্রশাসনিক কাজ গতিশীল করার জন্য যুব বিভাগ গঠন করা প্রয়োজন
৭। যুবসমাজের জন্য আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে
৮। যুবসমাজ কীভাবে উদ্যোক্তা হতে পারে, সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি
৯। সামান্য একটা লাইসেন্সের জন্যও যুবদেরি বভিন্ন জায়গায় যেতে হয়
১০। তাই যুবদের জন্য ওয়ান স্টপ সেবার ব্যবস্থা করতে হবে
১১। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বেশি সুযোগ–সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন
১২। যুবদের জন্য ঋণ প্রদান আরো সহজ করতে হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় যুবনীতিতে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের ‘যুব’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। যুবসমাজকে একটি জাতির স্তম্ভ, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও উন্নয়নের কারিগর বলা যেতে পারে। যুবকরা শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী, জাগ্রত জ্ঞানের অধিকারী এবং রাষ্ট্র-সমাজের পরিবর্তন-সংগ্রামের অগ্রনায়কমহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারীদের বিশাল একটি অংশ ছিল যুবক।

happy wheels 2

Comments