কন্যা শিশুকে বাদ দিয়ে সমাজে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়
মানিকগঞ্জ থেকে রিনা আক্তার ও মো. নজরুল ইসলাম
‘কন্যা শিশুর অগ্রযাত্রা দেশের জন্য নতুনমাত্রা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। তারই ধারবাহিকতায় মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে বারসিক ভিন্ন মাত্রায় পালন করছে দিবসটি।
সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সিংগাইর শহরে বারসিক’র সহযোগিতায় জাতীয় মহিলা সংস্থা, দুঃস্থ নারী ও কন্যা শিশুর শাহারা সেন্টার, নিরাভরণ থিয়েটার সেন্টার, অঙ্কুর কিশোরী ক্লাব, আলোর দিশারী কিশোরী ক্লাব এবং আঙ্গারিয়া নারী উন্নয়ন সমিতির যৌথ আয়োজনে সিংগাইর ক্রীড়া সংস্থার সামনে মানববন্ধন ও র্যালি করে জাতীয় মহিলা সংস্থার কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় সুলতানা রাজিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মানিকগঞ্জ জেলা খেলাঘর আসরের সভাপতি অধ্যাপক জগদিশ চন্দ্র মালো, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও গবষেক ডা. অধ্যাপক বেনিমাধব সরকার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সুভাষ কুমার রায়, বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়, নিরাভরণ থিয়েটর সেন্টার এর নাট্য নির্দেশক মো. সুজন সাইফ, অঙ্কুর কিশোরী ক্লাবের সভাপতি দুর্গা রাণী মন্ডল, আলোর দিশারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সোনালী আক্তার, আঙ্গারিয়া নারী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি সবিতা রাণী সরকার প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘আদিকাল থেকেই পরিবার ও সমাজে কন্যা শিশুরা অবহেলিত। এখানে প্রভাব বিস্তার করেছে ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার। এগুলো ভাঙতে হবে। সমাজের অসঙ্গতি ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায় প্রমুখ অবদান রেখেছেন। তাদের পথ অনুসরণ করে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব নেওয়া উচিত। কারণ কন্যা শিশুকে বাদ দিয়ে আমরা কখনও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন সাধন করতে পারবো না।’
বক্তারা জানান, বিভিন্ন ধর্মে নারীর সমান অধিকারের কথা বলা হলেও সেটি অন্তরালে রয়ে আছে। বর্তমান সরকার কন্যা শিশুর পরিপুষ্টতা ও লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অবদান রাখলেও সহিংসতার হার হ্রাস পায়নি বরং উন্নত ও আধুনিক সমাজে আজও বাল্য বিয়ে, যৌন হয়রানি, যৌতুকের মত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তারা বলেন, ‘আমরা এগুলো থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই। তাই আমাদের নারীদের নিরবতার সংস্কৃতি ভাঙতে হবে। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের মাধ্যমে এই সব সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব। তবেই আজকের প্রতিপাদ্য সার্থক হবে ও সমাজে টেকসই উন্নয়ন হবে।’