নিলুয়া বিল অতিথি পাখিতে মুখরিত

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
শীতে এবারও নিলুয়া বিলে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। পাখি দেখতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলৎপুর উপজেলার নিলুয়া বিলে পাখিপ্রেমীরা আসছেন। শীতকাল এলেই এই নিলুয়া বিল অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে। নিলুয়া বিল অতিথি পাখির কারণে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। পাখির উড়ে চলা, নীরবে বসে থাকা-মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন একনজর পাখি দেখার জন্য এখানে আসেন। শান্ত জলের বুকে কচুরিপানার সবুজ গালিচার মাঝে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলেছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত চারপাশ। মানিকগঞ্জের এই নিলুয়া বিল প্রতিবছর শীত মৌসুমে হয়ে উঠে যেন পাখির আবাসস্থল। এবারও এ বিলে আবাস বেঁধেছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিসহ হাজারো অতিথি পাখি। তাদের মধ্যে ‘পাতি সরালি’র সংখ্যাই বেশি। পরিমাণে গত বছরের চেয়ে কম, এমনটাই জানালেন স্থানীয়রা।


পাতি সরালি, রাজসরালি, বালিহাঁস, পাতিকূট, দেশি জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ি, বক, ছন্নিহাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি, বিল এলাকা মুখরিত করে তুলছে। দল বেঁধে যখন পাখিগুলো আকাশে ওড়ে, তখন মনে হয় তারা যেন মালার মতো দুলে উঠছে। যদিও বিলটিতে এখন পানি অনেকটাই কমে গেছে, তবুও এর সৌন্দর্য্য কমেনি এতটুকুও। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মূলত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে অতিথি পাখিরা এখানে আসতে থাকে। আবার মার্চের শেষ দিকে গরম পড়লে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। ৬-৭ বছর পূর্বে এই বিলে প্রথম অতিথি পাখি আসে।’


উল্লেখ্য যে, নিলূয়া বিলে পাখিদের মুক্তভাবে চলাচল করা এবং যাতে কেউ পাখিদের ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য সচেতনামূলক বিল বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে পাখি লালন করি (পালক) ও বারসিক’র উদ্যোগে। এই বিষয়ে বারসিক’র মানিকগঞ্জের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, ‘আমরা যার যার অবস্থান থেকেই পারি পাখির জন্য উন্মক্ত পরিবেশ তৈরি করতে। একটু সচেতনতাই পারে আমাদের দেশটাকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত করে রাখতে।’ অন্যদিকে নিলুয়া এলাকার মঞ্জু রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে পাখি দেখতে আসেন। পাখি প্রকৃতির সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণ ক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। অতিথি পাখিরা যেন ‘মুক্ত আকাশে, খালে, বিলে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে তার ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।’


প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণ ক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমাদের দেশ ক্রমে ক্রমে অতিথি পাখির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিলটির উন্নয়ন ও অতিথি পাখির নিরাপদ অভয়াশ্রম করার প্রত্যয় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

happy wheels 2

Comments