মুন্ডা আদিবাসীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হোক

শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বাবলু জোয়ারদার

করোনা মহামারী বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি। করোনামহামারী সময়ে সরকারি নিদের্শনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি ৬নং রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে হরেন্দ্র নাথ মুন্ডার সভাপতিত্বে আদিবাসী মুন্ডা জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় ৬নং রমজাননগর ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, ইউপি সচিব ও ভেটখালী গ্রামের মুন্ডা জনগোষ্ঠিসহ বারসিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন মনোদ্বীপা মুন্ডা, পঞ্চানন মুন্ডা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন, ইউপি সদস্য মহাসিন হোসেন, আব্দুল হামিদ লাল্টু এবং বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল প্রমুখ।

ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন বলেন, ‘আদিবাসী মুন্ডাদের পিছনে রাখা যাবে না। তাদেরকে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কাউকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। করোনা ভাইরাস আমাদের এখান থেকে একেবারে যাবে না। ভাইরাসকে সাথে নিয়ে আমাদের চলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখনো পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। আমাদের সবার সচেতন হতে হবে। সরকারী নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এলাকায় পানির সমস্যা আছে সে কারণে আমরা পরিষদ থেকে কিছু পানির প্লান্ট ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আরো কিছু পানির প্লান্ট ঠিক করার চেষ্টা করবো। তবে আমরা নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকবো, সাবান দিয়ে হাত ধোব, বাইরে গেলে অবশ্যই মাক্স ব্যবহার করবো।এভাবে আমরা করোনাকে জয় করবো।’

ইউপি সদস্য মহাসিন হোসেন ও আব্দুল হামিদ লাল্টু বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মুন্ডাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের সবার একসাথে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে আমাদের সবাইকে মুন্ডা জনগোষ্ঠির কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’


মনোদীপা মুন্ডা বলেন, ‘আমারা করোনাকালীন সময় খুব ভালোভাবে জীবন চালাতে পারছি না। কারণ কাজ ঠিকমত হচ্ছে না। তাছাড়া আমাদের এখানে পানির খুব সমস্যা। করোনার কারণে আয় কম হওয়ায় পানি কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে।’
এর আগে মতবিনিময় সভার শুরুতে আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পাল বারসিক’র কাজ নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ‘আমাদের সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মুন্ডাদের সামনের দিকে এগিয়ে আনতে হবে।’


বক্তারা জানান, সরকারি ও বেসরকারিভাবে পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মুন্ডাদের পাশে দাঁড়িয়ে করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও সহযোগিতা করতে হবে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী মুন্ডাদের হাতে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। উক্ত মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন বারসিক কর্মকর্তা বাবলু জোয়ারদার।

happy wheels 2

Comments