নারীকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান।
“ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন” প্রতিপাদ্যের আলোকে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের ব্রী-কালিয়াকৈর নয়াপাড়া কৃষক কৃষাণি সংগঠনের উদ্যোগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বারসিক’র সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি রমেলা বেগমের সভাপতিত্বে বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কৃষাণি মরিয়ম বেগম, মমেনা বেগম, আলেয়া বেগম,শহীতন বেগম, করিমন বেগম উজালা বেগম।আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মোঃ হয়রত আলী,সহ সাধারন সম্পদক মোঃ ছবেদ আলী, সদস্য মেছের আলী প্রমুখ।
সভাপতি রমেলা বগেম বলেন, ‘একজন গ্রামীণ নারী প্রতিদিন সংসারে যে কাজ করে তা একজন পুরুষে চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু পরিবারে নারীর কাজগুলোকে কখনো মূল্যায়ন করা হয় না। নারীর কাজের কোন সামাজিক ও অর্থনেতিক কোন মূল্য নেই। পারিবারে নারীর কাজের মুল্যায়ন করা হলে সমাজও নারীকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করবে।’ সংগঠনের সভাপতি মোঃ হযরত আলী বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। নারী তার নিজ যোগ্যতায় সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা বাণিজ্য, রাজনীতিসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। কিন্তু বাল্যবিবাহ, অনিচ্ছাকৃত সন্তান ধারণ, যৌন নির্যাতন, নারী পাচার, নারীর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। আবার নারীর শ্রমের মূল্য দারুণভাবে নারী দের সাথে বৈষম্য করে। কিন্তু নারীকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
উজালা বেগম বলেন, ‘কৃষি ও অন্যান্য কাজে পুরুষ শ্রমিক সংকট দেখা দিলে নারী শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়। নারী পুরুষের কর্মঘণ্টা সমান। পুরুষ মানুষ যে কাজ করে আমরাও সেই কাজ করি। কি নারীকে কখনই তার উপযুক্ত মজুরি দেওয়া হয় না। তাছাড়া নারীর নামে নিজস্ব সম্পত্তি না থাকায় সরকারি সেবা সহযোগিতা থেকেও বঞ্চিত হতে হয়।’
শহীতন বেগম বলেন, ‘পারিবারিক ও সামাজিক অসেচতনার কারণে বাল্য বিবাহ , যৌতুক , যৌন হয়রানিসহ নানা বিধ কারণে অনেক নারী নির্যাতিত হচ্ছেন। যৌতুক ও নারী নির্যাতনের ফলে অনেক নারীই আত্বহত্যার পথ বেছে নেয়। তাছাড়া স্কুল কলেজ, বাজার, গণবরিবহনে নারীর নিরাপত্তা জোরদার অবস্থায় নেই।’
উল্লেখ্য আলোচনা সভা শেষে অংশগ্রহনকারী নারী পুরুষ নারী অধিকার আদায়ে তাদের দাবি সম্বলিত পোষ্টার ধরে মৌন মানবন্ধন করেন।