সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমেই উন্নয়ন সম্ভব
সাতক্ষীরার, শ্যামনগর থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
‘আমরাও একটি ব্যারাকে বাস করি। আমাদের ব্যারাকের নাম সৈয়দালিপুর আশ্রয়ন প্রকল্প যা ১০ ঘর নামে পরিচিত। সেখানে আমরা ১০টি পরিবার বাস করি। সরকারিভাবে আমাদের ঘর, ল্যাট্রিন, পুকুর, রাস্তা তৈরি কওে দিয়েছিলো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তা সংস্কার না হওয়াতে নাজুক অবস্থায় আছে। আমাদের যে একটি পুকুর ছিলো তা পাশর্^বর্তী একজন প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করছিলো। বারসিক সহায়তায় বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম সাম্প্রতি পুকুরের একটি অংশ আমরা আশ্রয়ন জনগোষ্ঠী পেয়েছি। সেটাকে আমরা একটা সম্পদ মনে করছি। সেঠাকে সঠিক পরিকল্পনায় মাধ্যমে ব্যবহার করতে চাই। আজকে আমরা যে বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করতে এসেছি। এখানে দেখেছি তারা পুকুর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের ব্যারাকের উন্নয়নে খুবি ভূমিকা রাখছে। বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন প্রকল্পের লোকজন তারা একটু জমি ফাঁকা রাখিনি। তারা তাদের ভিটা সঠিক ব্যবহার করতে পেরেছেন। আমরাও আমাদের ব্যরাকটি এভাবে ব্যবহার করবো। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমেই উন্নয়ন সম্ভব।’
উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন নুরনগর ইউনিয়নের সৈয়দালিপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের তরুণ কৃষক রাকিব। গতকাল বারসিক’র সহায়তায় আশ্রয়ন প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় পারস্পারিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিনিময়ের লক্ষ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরে এসে তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দালিপুর আশ্রয়ন জনগোষ্ঠীর ৫ সদস্যের একটি দল বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন জনগোষ্ঠীর কর্মউদ্যোগ ও কর্মপ্রক্রিয়া পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে তারা পর্যায়ক্রমে বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন প্রকল্পের সরদার বেড, মন্ডল বেড, মুন্ডা বেড ও জেলে বেডের সবজি চাষ, ফলজ গাছ লাগানো, নদীর চর বনায়ন, ল্যাট্রিন সংস্কার, রাস্তা সংস্কার পুকুর ব্যবস্থাপনা, সংগঠন তৈরি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয় পরিদর্শন করেন এবং তাদের গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নের কৌশল সম্পর্কে পারস্পারিক আলোচনা ও মতবিনিময় করেন।
এ বিষয়ে বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন প্রকল্পের সাবেক সভাপতি রুহিতদাস সরদার ও কৌশল্যা মুন্ডা বলেন, ‘একসময় আমাদের এখানে মরুভূমি ছিলো। শুধু লোনা ধুলা বালি উড়তো দূর থেকে দেখলে চকচক করতো। দীর্ঘ সময়ের পর এবং চেষ্টা ও পরিশ্রম করে আমরা আমাদের ব্যারাকের অবস্থা পরিবর্তন করতে পেরেছি। হাল ছাড়লে হবে না। চেষ্টা করে যেতে হবে তাহলে সফলতা আসবে। আর আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বারসিক ছিলো আমাদের পথ প্রদর্শক। বারসিক চেনানো পথেই আমাদের হাঁটা শুরু হয়েছিলো।’
পরির্দশনে অংশগ্রহণকারী জাহাঙ্গীর, মনির, রশিদরা জানান যে, ‘আমাদের জায়গা খুবই কম। তবে আজ যা দেখলাম এখানে তাতে আগামী মৌসুম থেকে আমরা কোন জায়গা ফেলে রাখবো না। আমরাও এদের মতো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা এখান থেকে ফিরে গিয়ে আমারা একটি কমিটি তৈরি করে কার্যক্রম শুরু করবো।’
সবশেয়ে পরিদর্শনে অংশগ্রহনকারীরা তাদের ব্যারাকের উন্নয়নের জন্য কিছু সুপারিশ বা চাহিদা প্রদান করেন যে ব্যারাক ভরাটকরণ, গাছের চারা, বেড়া/ঘেরা দেওয়ার উপকরণ এবং মাছ চাষের জন্য মাছ সহায়তা।