মানুষের কল্যাণে জলাভূমি
নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান
জলাভূমিকে বলা হয় প্রাণবৈচিত্র্যের প্রাকৃতিক যাদুঘর। বাস্তুতন্ত্র, স্থানীয় ও আঞ্চলিক তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, মিঠাপানির আধার, ভূগর্ভস্থ উৎস, কার্বন আধার, জলবায়ু অভিঘাত প্রশমন, অভিযোজন, জীবিকার উৎস, অর্থনৈথিক অবদান, মাছ ও প্রাণবৈচিত্র্যেও আবাসস্থল, পরিবেশ সুরক্ষাসহ মানুষের জীবনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জলাভূমি মানুষের কলাণে কাজ করেছে চলেছে। আজ বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে নেত্রকোণা বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি নেত্রকোণা অঞ্চলের নদী হাওর খাল, পুকুরসহ সকল জলাভূমি সুরক্ষার দাবিতে নেত্রকোণা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে জলাভূমির প্রতি সংহতি প্রকাশ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের আয়োজন করে।
আয়োজেনে নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ, নেত্রকোনা উদীচী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, হিমু পাঠক আড্ডা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, অক্সিজেন যুব, উজ্জীবিত নেত্রকোনা ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি সভাপতি নাজমুল কবীর সরকারের সভাপতিত্বে কথা আলোচনা করেন, সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ এমরান, উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, প্রবীণ সাংবাদিক নেত্রকোনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামলেন্দু পাল, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান, শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি সম্পাদক সাংবাদিক আলপনা বেগম, পরিবেশ কর্মী ও নেত্রকোনা সম্মিলিত যুবসমাজের তাজিম রহমান, সমকালের সাংবাদিক খলিলুর রহমান শেখ ইকবাল, সোহরাম উদ্দিন আকন্দসহ অনেকেই ।
নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের সাইফুল্লাহ ইমরান বলেন, “বারসিক’র সহযোগিতায় শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির উদ্যোগে আজ আমাদের হাওরের আড়াই কোটি মানুষের পক্ষে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি জলাভূমি সংরক্ষণের দাবিতে, এই জলাভূমি প্রাণবৈচিত্র্যের আবাসস্থল এই পাশে বহমান মগড়া, ধলই, ধনু সোমেশ্বরী আমাদের মায়ের মতো। জলাভূমিগুলো রক্ষা করা জরুরি। সরকার জলাভূমি রক্ষা করবে আমরা সহযোগিতা করবো। জলাভূমি মানুষের কল্যাণের জন্য, কিন্তু মানুষই তা দখল করছে”। উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মগড়া নদী ও শহরের পুকুরগুলো আজ দখল, দূষণ ও ভরাট হচ্ছে, কিন্তু এগুলো বিলুপ্ত হলে আমরা পানির জন্য হাহাকার করবো। সেদিন হয়েতো বুঝবো জলাভূমি কেন আমাদের দরকার, কতটুকু দরকার।’
সভাপতির ভাষণে নাজমুল কবীর সরকার বলেন, ‘নেত্রকোণা জলাভূমি রক্ষার জন্য সকল পরিবেশ কর্মীর যেমন দায়িত্ব রয়েছে তেমনি দায়িত্ব প্রশাসনের। জলাভূমি বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ, এই জলাভূমি আমরা হারাতে পারিনা। তাহলে আমরা বিপন্ন হয়ে যাবো। আসুন সবাই মিলে জলাভূমি রক্ষায় এগিয়ে আসি।”
জলাভূমির প্রতি সংহতি শেষে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ও নেত্রকোনা পৌর মেয়র বরাবর জলাভূমি শহরের পুকুর রক্ষা ও মগড়া নদী রক্ষার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।