নার্সারি করে লাভবান হচ্ছেন অনন্ত সরকার
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে সত্যরঞ্জন সাহা
‘জীবনটা গতিময়, গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। বর্তমানে শুধু একটি পেশা দিয়ে সংসার চলানো খুবই কঠিন। নার্সারি করার মাধ্যমে আমার ইচ্ছা হলো গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শাকসবজি চাষ হবে। মানুষজন নিরাপদ খাদ্য খাবে, পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে, অসুখ কম হবে, আমরা সকলে ভালো থাকব।’
উপরোক্ত কথাটি বলেছেন হরিরামপুরের বাহিরচরের বাসিন্দা অনন্ত সরকার। তিনি মনে করেন, পরিবার পরিজনসহ সকলকে নিয়ে মিলে মিশে চলতে হলে পেশার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তিনি স্কুলের সহকারি শিক্ষকের পেশার পাশাপাশি নানান অর্থনৈতিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি ভেবে চিন্তে নতুন কাজ করার জন্য নার্সারি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। বারসিক’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তিনি নার্সারি করার নানান তথ্য সংগ্রহ করেন। এছাড়া ইন্টারনেটে গিয়ে তিনি রংপুরে কোকোপিট নার্সারি সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি নিজে সেই নার্সারি পরিদর্শন করে আসেন এবং সাথে চারাও ক্রয় করেন। এছাড়া নার্সারি করার জন্য রংপুরের মিঠাপুকুর থানার রাণি পুকুরের একজন সফল নার্সারির মালিক ও অভিজ্ঞজনের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেন ওই সময়।
অভিজ্ঞতা অর্জন করে তিনি ফিরে এসে বাড়িতে নার্সারি শুরু করেন। এই কাজের সাথে তাঁর মা অনিতা রাণী বিশ্বাস (৫৫) সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। মূলত তাঁর মা নার্সারির চারায় পানি ও সিডলিং ট্রেতে বীজ দেওয়া, আগাছা বাছাই এবং দেখা শোনার কাজ করে করেন। কোকোপিট নার্সারি করার জন্য কোকো ডাষ্ট পঁচিয়ে ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে কোকোপিট/জৈব সার তৈরি করেন তিনি। এলাকার কৃষকদের নিকট থেকে শাকসবজির লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, ঝিঙ্গা এবং বাজার থেকে দেশী করলা, পেঁপে, বরবটি, মরিচ, তরমুজ বীজ সংগ্রহ করেন। এলাকা থেকে নারিকেলের ছোবা সংগ্রহ করে কোকোডাষ্ট তৈরি করেন। প্রতি পিচ চারা তৈরি করতে ফসলের প্রকার ভেদে তাঁর খরচ হয় পঞ্চাশ পয়সা থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে প্রথম বছর তিনি ৮ হাজার চারা তৈরি করেন। এ পর্যন্ত প্রতি পিচ চারা সর্ব নিম্ন ২ টাকা ও সর্বচ্চো ২৫ টাকা করে গড়ে পশ্চিশ হাজার টাকার চারা বিক্রয় করেছেন। এভাবে নার্সারি করে তিনি তার পরিবারের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হন।