বৃষ্টি মানে মানবজীবনে অন্যরকম অনুভূতি
মানিকগঞ্জ থেকে এম.আর.লিটন:
বৃষ্টি মানে মানব জীবনে অন্যরকম অনুভূতি । যেমন টিনের চালে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ মন ভরে যায় । বৃষ্টির দিনে বন্ধুরা মিলে চানাচূর মুড়ি এবং খিচুরি খেয়ে আড্ডা, আবার কখনও প্রিয় মানুষের হাতধরে বৃষ্টিতে ভেজা, কিযে মধুর ! কিযে আনন্দের ! এসময় যারা উপভোগ করে তারাই শুধু জানে ।
প্রকৃতির নিয়ামত হলো বৃষ্টি । আর বৃষ্টির সাথে মানুষের রয়েছে গভীর সম্পর্ক । বৃষ্টিকে নিয়ে মানুষ রচনা করেছে অজস্র কবিতা ও গান । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতায় লেখেছেন, “এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়-/এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরঝরে/তপনহীন ঘন তমসায়।।”
বৃষ্টি আসলে প্রকৃতির মাঝে দারুণ পরিবর্তন দেখা যায় । সেই সাথে মানুষের মনের ভেতরেও পরিবর্তন ঘটে। বৃষ্টির দিনে প্রিয় মানুষটাকে কাছে পাওয়ার ব্যকুলতা বেড়ে যায় ।
গ্রামের জীবনের চেয়ে নগর জীবনের বৃষ্টির প্রভাবটা একটু ব্যতিক্রমী । সামন্য বৃষ্টির কারণে আজকাল নগরের অলিগলি রাস্তাঘাট সব জলাবদ্ধ হয়ে পরে । যানবাহন-চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । যদিও এটা মানুষের সৃষ্ট অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণেই হচ্ছে ।
বৃষ্টিতে ভিজে অনেক সময় মানুষ রোগে আক্রান্ত হয় । যেমন সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথা এবং ভাইরাস জনিত রোগ বৃদ্ধি পায় । এছাড়াও লক্ষ্য করা যায় আকাশে মেঘ জমলে বজ্রপাত হয় । এতে অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে ।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কখনো অনাবৃষ্টি আবার ভারী বর্ষণ দেখা যায় । এর কোনটাই আমাদের কাম্য নয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং কৃষিকাজের জন্য বৃষ্টির কোন বিকল্প নেই ।
প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানব জীবনের বৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা অনেক । আজকাল পানির অভাবে বৃষ্টির পানিকে বিশুদ্ধ পানি হিসেবে ব্যবহার করাছে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ মানুষ ।
বৃষ্টির বানে নদ-নদী, খাল-বিল জলে থই থই করে এবং আকাশ থেকে বৃষ্টির টাপুর-টুপুর সুরধ্বনির, বৃষ্টিভেজা মাটির সোঁদাগন্ধ বা বৃষ্টিস্নাত ফুলের সুবাস ‘পুর্ব হাওয়াতে দেয় দোলা, হৃদয় নদীর কূলে কূলে জাগে লহরী’।
আমাদের দেশে আষাঢ় মাসে বৃষ্টি বেশি হয় । বিষয়টি যেমন সত্য, তেমন জলবায়ু পরির্বতনের ফলে এখন সরাবছর মাঝে-মধ্যে বৃষ্টি লক্ষ্য করা যায় ।