স্থানীয় বীজ ভবিষ্যৎ কৃষিকে টিকিয়ে রাখবে
উপকূল থেকে গাজী আল ইমরান
‘স্থানীয় বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে টিকে থাকবে ভবিষ্যৎ কৃষি। কৃষকেরা নিজের বাড়িতে বীজ ব্যাংক তৈরি করায় বিভিন্ন দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে কৃষক বড় ধরনের লোকশান থেকে বেঁচে যাচ্ছে। ২০২১ সালে অতি বৃষ্টিতে উপকূলীয় শ্যামনগর অঞ্চলের অধিকাংশ বিলের ধানের পাতা নষ্ট হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েন কৃষক। কৃষকের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকের ঘরে সংরক্ষিত স্থানীয় ধানের বীজ ব্যাংক ব্যাপকভাবে ভূমিকা রেখেছে। কৃষি অধিদপ্তর মাঠ পর্যায় থেকে বিভিন্ন কৃষকের সংরক্ষিত স্থানীয় বীজ ক্রয় করে কৃষকের মাঝে বন্টন করেছেন। তবে সেটি হাইব্রিড হলে কখনো সম্ভব হতোনা। স্থানীয় বীজ কৃষকের বন্ধু। বাজার থেকে বীজ কিনে বহু কৃষক ব্যাপকভাবে ঠকেছেন। আমরা এসমস্ত বীজের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছি।’
শ্যামনগরে স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষণ ও সবজি উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে শ্যামনগর উপজেলা কৃষি কৃষিবিদ এনামুল ইসলাম শতবাড়ির কৃষাণী অর্চনা রানী মন্ডলের বাড়িতে কৃষিাণীদের সাথে মতবিনিময়কালে এসমস্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কৃষক বীজ সংরক্ষণ করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছিল বললেই চলে। তারা আবার নতুন করে বীজ সংরক্ষণের বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন।’
এসময় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বারসিককে তিনি ধনাবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বারসিক স্থানীয় বীজের প্রচলন ঘটানো, বীজ সংরক্ষণে সহায়তা এমনকি বীজ সংরক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে, যা এলাকার খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপকভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।’ কৃষকের মাঠ পরিদর্শন কালীন শতবাড়ির কৃষাণী অর্চনা রানী বলেন, ‘আমি বীজ সংরক্ষণ না করে বহুবার ঠকেছি। বাজারের বীজ বপনের ফলে কয়েকবার ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি বিগত কয়েকবছর যাবত আমার বাড়িতে উৎপাদিত সবজি থেকে বীজ সংরক্ষণ করি যা আমার সবজি ক্ষেতে বপনের পরে বিনামূল্যে প্রতিবেশিদের দিয়ে থাকি।’
কৃষি অফিসার মাঠ পরিদর্শন কালীন এসময় উপস্থিত ছিলেন বারসিক কর্মকর্তা বিশ^জিৎ মন্ডল, গাজী আল ইমরান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিও ইয়ুথ টিমের আহবায়ক কমিটির সদস্য ফটোগ্রাফার আনিসুর রহমান মিলনসহ এলাকার কৃষক কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।