স্থায়িত্বশীল কৃষিচর্চা করে বেশ ভালো আছেন কৃষক এমদাদুল
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষি যেমন একটি পরিবারকে টিকিয়ে রাখে তেমনি পাড়া প্রতিবেশীসহ দেশটাকেও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই কৃষি চর্চা করেই পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন অনেকে। কৃষিকে প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়াদের তালিকায় কৃষক মো. এমদাদুল হক (৫৫) অন্যতম। তাঁর বাড়ি ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কালিগংঙ্গা নদীর তীরের তরা গ্রামে।
তিন সন্তানের জনক মো. এমদাদুল হক স্থায়িত্বশীল কৃষি চর্চা করেন। তিনি তাঁর ২৫ শতাংশ জমিতে জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করেন। যেখানে তিনি জৈব সার, জৈব কীটনাশক ব্যবহার করেন। তিনি বাইরের কোন উপাদান ব্যবহার করেন না। তাই উৎপাদিত সবজি তাই বিষমুক্ত। এমদাদুল হক বলেন, ‘আমার পাঁচ প্রকার কলার জাতের সাথে আদা, হলুদ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। আমার লাউ দেখে আমাদেও গ্রাম এবং অন্য গ্রামের কৃষকরা লাউয়ের বীজ চেয়েছেন। সারাবছর আমি বাড়িতে সবজির চাষ করি। বেগুন, মরিচ ও পেঁপে বছরজুড়ে চাষ করি। আমি প্রতি মৌসুমের জন্য বীজ ও সংরক্ষণ করি।’
তিনি তাঁর সংরক্ষিত বীজ নিজ পাড়ার ও প্রতিবেশীদের মাঝে বিনিময় করেন। এ বছর বেল আলুর সম্প্রসারণ করবেন যা তিনি বড় গাছের সাথে ফলন করেছেন। তিনি কেঁচো সারও তৈরি করেও তা ব্যবহার করেন। প্রতিবছর গ্রামের মানুষদের সবজির বীজ, কেঁচোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে থাকেন। তাঁর কাছ থেকে কেঁচো সার তৈরির পদ্ধতি শিখে গ্রামের অন্য চারজন কৃষক ব্যবহার করছেন। বিষমুক্ত সবজি চাষের পাশাপাশি এমদাদুল হক নার্সারি করেছেন। বসতভিটায় কোন জায়গা পতিত না রেখে তার নিজের সম্পদকে সুষ্ঠ ব্যবহার করে ফসল ফলানোর মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করে চলছেন। তাঁর শতবাড়ির মাধ্যমে নিজে শত রকমের কাজের মাধ্যমে বিকশিত করছেন।
এমদাদুল হক বলেন, ‘আমার বাড়িটি একটি শতবাড়ি। এখানে নানান ধরনের প্রাণবৈচিত্র্য আছে। আমার বাড়িতে বারোমাস সবজি চাষ হয় যেমন ঢেঁড়স, পেপেঁ, ডাটাশাক, পুঁইশাক, দেশী লাউ, কচু, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, ঝিঙ্গা, বরবটি, শিম, উচ্ছে, শসা, লালশাক, পালংশাক, দেশী আলু, বেল আলু , বেগুন ইত্যাদি ফসল চাষাবাদ করি।’ তিনি এসব সবজির পাশাপাশি নানান ধরনের ফলজ ও কাঠ জাতীয় গাছ রোপণ করেছেন। তাঁর বাড়িতে আম, জাম, কলা, কুল, নারকেল, পেয়ারা, গাব, খেজুর, বেল ইত্যাদি ফলদ গাছ আছে। এছাড়া তিনি হাঁস, দেশী মুরগি, কবুতর পালন করেন। কৃষিকাজ করে তিনি ভালো আছেন বলে জানান।