ফসলের হাসপাতালে পোকা পরিচিতি কর্মশালা অনুষ্ঠিত
নেত্রকোনা থেকে আ. রব
কৃষি প্রধান এই দেশে মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা, দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জীবন ও জীবিকা উন্নয়নের চাকা সকরকিছুই কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এই সভ্যতা। কৃষকের আপনকৃষি, জ্ঞান, বীজ, সার, প্রযুক্তি দিনদিন পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বিষ ও সার নির্ভরকৃষি দিনদিন কৃষকের কাছে দূর্যোগ হিসেবে দেয়। দিনদিন বাড়ছে ফসলে পোকা। পোকা দমনে কৃষক না জেনে না বুঝে অবাধে ব্যবহার করছে বিষ, কীটনাশক, বিষাক্ত হয়ে উঠছে মাটি, পানি, বাতাস, পরিবেশ প্রকৃতি। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জটিল রোগে। তাই প্রয়োজন ফসলের চিকিৎসার জন্য জায়গা তৈরী করার।
যে ফসল আমার জীবন ও জীবিকার একমাত্র অবলম্বন সেই ফসলের চিকিৎসার জন্য নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউয়িনের আশুজিয়া গ্রামের কৃষক সংগঠন এক ফসলের রোগবালাইর চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষকের লোকায়ত জ্ঞানের মাধ্যমে তার এলাকার শস্যফসলের চিকিৎসা করে থাকেন। ফসলের হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন কৃষক আবুল কালাম। তিনি গ্রামের আরো ৫ জন কৃষককের সহায়তায় এই কাজ করে থাকেন। প্রতিমাসেই পোকাপরিচিতি, জৈববালাই ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ, জৈববালাই নাশক তৈরি ব্যবহার, পার্সিং উৎসব, কম্পোস্ট তৈরি ও প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা বিনিময় করে গ্রামের কৃষককে প্রাকৃতিক এই ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। তিনি গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে নীম গাছ রোপণ করে গ্রামকে নীম গ্রাম তৈরি করতে চেষ্টা করছেন।
গতকাল তিনি গ্রামে কৃষক কৃষাণীদেরকে নিয়ে ফসলের পোকা পরিচিতি শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করেন। তিনি উপকারী পোকা ও অপকারী পোকার চার্ট নিয়ে কৃষকদের কাছে পরিচয় প্রদান করেন। ফসলের কি কি রোগ হয়ে তার জন্য তিনি রোগাক্রান্ত গাছ নিয়ে আসেন ও জৈব উপায়ে কিভাবে চিকিৎসা করতে পারেন তার জন্য সকলকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘পোকার আক্রমণের কথা প্রতিদিনই কৃষকের মাঝে শুনতে পাই। সংগঠনের মাসিক সভায় কৃষকের কাছ থেকে ফসলে পোকার আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে আসতেছি। তাই চিন্তা করলাম আমার গ্রামেও একটি ফসলের হাসপাতাল তৈরী করে কাজ শুরু করি। এলাকার অন্য কৃষকেরা বীজ, জৈবকৃষি চর্চার বিষয়,আক্রান্ত বেগুন গাছ, টমেটো গাছ,সীম গাছের আক্রান্ত পাতা নিয়ে আসতে শুরু করেন। আমি এস সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছি নীমপাতা, এর্গা পাতা, গরুর চেনা, নেপতালিন, কেরোসিন নানা উপকরণ দিয়ে তৈরী করা ঔষধ দিয়ে। যা পরিবেশের কোন ক্ষতি করেনা। মাটি, পানি, বায়ু ভালো থাকে।”