দু’টি পুকুর সাশ্রয় করে একুশ লক্ষ টাকা
নেত্রকোনা থেকে রুখসানা রুমি
‘প্রকৃতির জন্য পানি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে আলোচনা ও শিক্ষার্থীদের শপথের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী পানি দিবস ২০১৮ উদযাপন করা হয়। প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল পলাশ বলেন,“ আমাদের চারপাশে যেসব প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো আছে সেগুলো রক্ষা করা জরুরি । নদী,পুকুর, জলাধার রক্ষাসহ প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণ করতে হবে। তা নাহলে পানির জন্য হাহাকার বাড়বেই। জীবনের সকল কিছুতেই পানির প্রয়োজন । জীবনের জন্য পানির উৎসগুলো বাঁচানো জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
নেত্রকোনার ৫৭টি নদী, শতশত পুকুর, খাল,বিল, ৮০ টি হাওর, জলাধার দিন দিন হারিয়ে গিয়ে পানি শুন্য হচ্ছে, কমে যাচ্ছে সেচের পানি, গোসলের পানি, পান করার পানি। পানির কমার সাথে সাথে বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণবৈচিত্র্য, পেশা, উত্তপ্ত হচ্ছে এলাকার আবহাওয়া। মানুষ মাটির নীচের পানির উপর নির্ভরশীল হচ্ছে। যা ভূগর্ভস্থ পানির উৎসকে সংকীর্ণ করার পাশাপাশি বিদ্যুত এবং অর্থেরও বিশাল অপচয় করছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সোনিয়া আক্তার মীম পুকুর কিভাবে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচায় এমনি একটি গবেষণা সমীক্ষা পড়ে শোনান সকল শিক্ষার্থীদেরকে। সেই হিসেবে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারেন যে, নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর ও উপজেলা পুকুরে সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যে ছয়টা পর্যন্ত প্রায় ৫৬০০ জন মানুষ গোসল করে, কাপড় কাচে, বাসনপাতিল ধোয়ার কাজ করে, দোকানের জন্য পানি সংগ্রহ করে, প্রভৃতি।
এই কাজগুলো করতে প্রতিজন গড়ে ১০৯.৩৫ লিটার পানি ব্যবহার করে। মর্টারের সাহায্যে ১৮০০ লিটারের একটি ট্যাংকি পানি দিয়ে ভরতে লাগে ৪০ মিনিট ও বিদ্যুৎ খরচ ২১ ইউনিট । তাহলে ৫৬০০ জন মানুষ ৬১২৩৬০ লিটার পানি ব্যবহার করে এবং মর্টার দিয়ে উঠাতে ৭১৪৪.২০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। প্রতি ইউনিটের দাম ৯.৮ টাকা হলে মোট একদিনের খরচ হয় ৭০০১৩.১৬ টাকা। প্রতিদিন একজনের খরচ ১২.৫০ টাকা। একমাসে খরচ হয় ২১০০০০০ (একুশ লাখ টাকা)।
দু‘টি পুকুর আমাদের বাঁচাতে পারে মাসে একুশ লক্ষ টাকা। তাই ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার কমিয়ে বৃষ্টি এবং পুকুর ও নদীর ন্যায় ভূপৃষ্ঠস্থ পানি বেশি বেশি ব্যবহার করতে হবে। আসুন পরিবেশ রক্ষা করতে, পানির উৎসের টেকসই ব্যবহার করতে পুকুর, নদী ও অন্যান্য জলাশয়গুলো রক্ষা করি।