সংরক্ষণাগার থাকলে মরিচের ভালো দাম পেতেন কৃষকরা
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
কাঁচা মরিচ চাষ করে বিপাকে পড়েছেন ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের কৃষকরা। এবার মরিচের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে মরিচ চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা। উৎপাদন খরচ, ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে যে টাকা খরচ হয় সে টাকাও উঠেনা। এতে চাষিরা মরিচ নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। মানিকগঞ্জ প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে পাঁচ টাকা কেজি দরে! অথচ রাজধানী ঢাকা পযর্ন্ত পৌছাতে দাম বেড়ে হয়ে যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। মরিচের দাম আর না বাড়লে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে চাষিদের। এ অঞ্চলের কৃষকদের কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণাগারের দাবি জানাচ্ছেন অনেকে।
মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর, হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলায় বেশি মরিচ চাষ হয়। মরিচ কেনাবেচার বিখ্যাত স্থানগুলো হলো: বরংগাইল হাট, পুখুরিয়া আড়ৎ, বানিয়াজুরী আড়ৎ, কেল্লাই আড়ৎ, বাঠুইমুরী হাট, ঝিটকা হাট, ঘিওর হাট, মাচাইন আড়ৎ, বুতুনী আড়ৎ, তাড়াইল আড়ৎ, বাল্লা আড়ৎ ইত্যাদি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতবছর মরিচের দাম ভালো থাকায় এবার মরিচের আবাদ বেড়েছে । এ বছর ৫ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে।
কেল্লাই আড়ৎ-এ মরিচ বিক্রি করতে আসা গাংডুবী ও ঠাটাংগা গ্রামের শচীন মন্ডল ও মো. আবুল মিয়া জানান, এ বছর তারা ২ বিঘা করে মরিচ চাষ করেছেন। পরিচর্যার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে মরিচের দাম না থাকায় তাঁরা খবুই হতাশ। আড়তে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে পাঁচ টাকা থেকে সাত টাকা। ক্ষেত থেকে মরিচ তোলা বাবদ দিতে হয় পাঁচ টাকা কেজি। অনেক কৃষক মরিচ তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে ক্ষেতেই মরিচ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করেন কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য যদি সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয় তাহলে কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য লাভ করতে পারবেন এবং কৃষিপণ্য নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেত।
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর, শিবালয়, হরিরামপুর উপজেলায় মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিন্দু সাদা ও বিন্দিু কালো ২ জাতের মরিচ বেশি চাষ হয়। ভালো দাম পেলে এ এলাকার কৃষকরা মরিচ চাষে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবেন।