নেত্রকোনা থেকে তোবারক হোসেন খোকন

ঢেঁড়সের সংস্কৃত নাম রোমশ। আয়ুর্বেদ মতে, এ সবজিটি খুবই কার্যকরী। এটি কোষ্ঠ পরিষ্কারক, পিত্তবিকার নাশক, রুচিবর্ধক তবে বায়ুবর্ধকও বটে, মূত্রবর্ধক ও অশ্মরী দূরীকারক অর্থাৎ শরীরে জমা পাথর গলিয়ে বের করে দেয়। এটিকে ডিনডিশও বলা হয়, ইংরেজিতে বলা হয় ওকরা বা লেডিস ফিঙ্গার।

এ সবজিটি ডায়াবেটিসে বিশেষ উপকারী, পেসারের অসুখ সারায়, পুষ্টি গুণে ভরপুর। এটি মেধা বাড়ায়, তবে বাতবর্ধকও। ঢেঁড়শ বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসায় ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নিচে এর ব্যবহার বিধি দেয়া হলো আসুন আমরা জেনে নেই –

প্রসাবের উগ্র গন্ধ
কাঁচা ঢেঁড়শ বীজ বাদ দিয়ে ২৫-৩০ গ্রাম নিতে হবে। তারপর এক লিটার পানিতে সিদ্ধ করে আন্দাজ ২৫০-৩০০ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে পানিটা দিনে দুই থেকে তিনবারে পান করতে হবে। এভাবে কয়েক দিন খেলে দেখা যাবে উগ্র গন্ধটা সেরে গেছে।

প্রসাবের স্বল্পতা
যারা পানি কম পান করে না, অথচ পান করার পরিমাণ মতো প্রসাব হয় না, তারা বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়স ৪ থেকে  ৫ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে দেড় থেকে দুই কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে চট্চটে সে পিচ্ছিল পানি পান করলে প্রসাব সহজভাবে হবে ও পরিমাণে বেড়ে যাবে।

খুসখুসে কাশি
বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়স কুচিকুচি করে কেটে কড়া রোদে শুকিয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে ৫-৭ গ্রাম পরিমাণে নিয়ে চিনির কড়া রসে মেড়ে মোমবাতির মতো পাকিয়ে রাখতে হবে। গলা খুসখুস করলেই একটু চুষে খেলে এ কাশি চলে যাবে। যেকোনো বয়সের লোক এটি খেতে পারে এবং সাথে সাথে উপকার পাওয়া যায়।

ডায়াবেটিস বা ব্লাড সুগার
রক্তে শর্করা বাড়লে বা বাড়তে থাকলে কালো জামের বিচির গুঁড়ো এক গ্রাম নিয়ে ৩-৪টি কাঁচা ঢেঁড়সের সিদ্ধ পানির সাথে প্রতিদিন করে কিছু দিন খেলেই এটি আর থাকবে না।

মূত্রদোষ
ধাতুক্ষরণে মূত্রনালী টিপলে একটি তরল পিচ্ছিল পাতলা আঠা বের হয়। এ ত্রুটি প্রোস্টেট গ্যান্ডের ক্ষরণও হতে পারে। এ রকম ক্ষরণ হলে ২৫-৩০ গ্রাম কাঁচা ঢেঁড়স (৩-৪ টা মতো) বেঁটে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পাতলা কাপড়ে ছেঁকে কয়েক দিন খেতে হয়। এর ফলে দুই-তিন দিনের মাঝে অসুবিধাটা চলে যাবে। তবে হজম শক্তি ভালো না থাকলে কাঁচা বেটে না খেয়ে পানিতে সিদ্ধ করে ছেঁকে খাওয়া ভালো।

দাস্ত অপরিষ্কার
দাস্ত অপরিষ্কার, খাওয়ার সাথে সাথে সারা শরীরে কামড়ানি, এমন অবস্থায় বীজ বাদ দিয়ে ২০-২৫ গ্রাম ঢেঁড়স ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে সে পানি মাঝে মাঝে খেতে হবে। তাতে অসুবিধাটা চলে যাবে, সে সাথে প্রসাবও পরিষ্কার হবে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট