প্রবীণদের প্রগতিশীল চিন্তার ফল আজকের উন্নত বাংলাদেশ
সত্যরঞ্জন সাহা, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ
বারসিক’র উদ্যোগে আজ (৩০ জুন) বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন প্রতিরোধ সচেতনতা দিবস-২০২১ উপলক্ষে এক অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজ কর্মী ইকবাল খান।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘আমাদের সকলকেই প্রবীণ হতে হবে। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা, উদ্যোগ, আমাদেরকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের পথ চলার সহায়ক হবে। প্রবীণদের সুন্দর চিন্তার ফল আজকের উন্নত বাংলাদেশ। আমরা যুবকগণ উদ্যোগ নিয়ে প্রবীণ নির্যাতন রোধে অনলাইনে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। প্রবীণদের উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের সুন্দর পথ চলার জন্য প্রবীণ কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের পথ চলাকে আরো সুদৃঢ় করে যাচ্ছেন। আমাদের উদ্যোগ আগামী দিনে প্রবীণ নির্যাতন প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
সভায় বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, ‘প্রবীণ নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের পারিবারিকভাবে সচেতনতা অত্যাবশক। প্রবীণ ব্যক্তিগণ আমাদের দেশে অধিকাংশই অসহায়। প্রবীণ নির্যাতনে সরকারি আইন আছে, জেল জরিমানার বিধান থাকলেও প্রয়োগ নেই, কারণ মা-বাবারা কখনো ছেলে মেয়েদের সাজা হোক সেটা চান না। প্রবীণ জনগোষ্ঠীর প্রতি অবহেলা ও নির্যাতন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিবসটি পালনের মাধ্যমে সমাজে বিরাজমান প্রবীণ নির্যাতন ও প্রতিকার সম্পর্কে সচেতনতা এবং জনমত সৃষ্টি হবে। প্রবীণ নির্যাতন সব দেশে, সব সমাজেই রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবীণের শান্তি, সুখ, মর্যাদা, অধিকার পাওয়ার জন্য সকলের এক যোগে কাজ করতে হবে। দেখা যায় সব সমাজেই প্রবীণ নির্যাতনের বিষয়টি আড়াল করার প্রবণতা রয়েছে। প্রবীণ পিতামাতার শারীরিক, মানসিক অক্ষমতা ও সরলতাকে জিম্মি করে তাদের অর্থসম্পদ করাত্ব করে নিচ্ছে; বিনিময়ে পাচ্ছে নির্যাতন। তাদের সামর্থ্য থাকার পরও তাদের সম্পদকে তারা ব্যবহার করতে পারছে না। সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ি বাংলাদেশে বয়স্ক ভাতা পায় প্রায় ৫০ লাখের বেশি প্রবীণ ব্যক্তি। ২০৫০ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের ১ ভাগ থাকবে প্রবীণ জনগোষ্ঠী। এসব বাস্তবতাকে সামনে রেখে প্রবীণ নির্যাতনের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের সমাজকে সচেতন হতে হবে। আমরা চাই না কোন প্রবীণ ব্যক্তি বৃদ্ধাশ্রমে যাক, কষ্টে আত্মীয়স্বজন ছাড়া জীবনযাপন করুক।’
আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন মনিরুজ্জামান চাতক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মীর নাদিম হোসেন, হরিরামপুর অনলাইন ভিক্তিক যুব স্বেচ্ছাসেবক টিমের আহ্বায়ক জাকির হোসেন, কৃষক সুচরন মনিদাস, বারসিক কর্মী সুবীর সরকার, মুকতার হোসেন ও সত্যরঞ্জন সাহা
উল্লেখ্য, প্রবীণ অধিকার নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বারসিক সমাজের বিভিন্ন স্তরে কাজ করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। বারসিক বিশ্বাস করে প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি তাদের সন্তানরা যথাযথ সন্মান ও মর্যাদা প্রদান করবে। প্রবীণ নাগরিকগণ আমাদের সিনিয়র সিটিজেন অর্থ্যাৎ সন্মানিক নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা বিধান করা পরিবার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যেখানে প্রবীণ নাগরিক নির্যাতনে শিকার হবেন সেখানে রাষ্ট্রকে আইন প্রযোগ করতে হবে। প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি আমাদের ব্যবহার হোক বন্ধুত্বপূর্ণ, আমার চাইনা প্রবীণ নিবাস বা বৃদ্ধাশ্রম, আমরা প্রতিটি পরিবার হোক শান্তির নীড়। পারিবারিক সম্প্রীতির বন্ধনে অনাবিল হাসিতে প্রবীণ নাগরিক বসবাস করুন-এই প্রত্যাশা করছি।