বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ
মো. মনিরুজ্জামান ফারুক, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে
শাকসবজিতে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। যা মানব দেহ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাকসবজি রেখে পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগবালাই থেকে আমরা বাঁচতে পারি। আর এ জন্য চাই শাকসবজির চাষ।
এখন চলছে শীত মৌসুম। শীতকাল সবজি চাষের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। বসতবাড়ির অব্যবহৃত আঙিনা হতে পারে সবজি চাষের জন্য উপযুক্ত জায়গা। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বসতবাড়িতেই রয়েছে অব্যবহৃত জায়গা। ইচ্ছে করলে সেখানে নানা ধরনের শাকসবজির চাষ করা যায়। কম খরচে সবজি চাষ করে সহজেই পরিবারের খাবার ও পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব।
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ভবানীপুর দিয়ারপাড়া মহল্লার হাছেন আলী মন্ডলের পুত্র আলম হোসেন মন্ডল (৩২)। ৩ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। সংসারে অভাব অনটনের কারণে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। গবাদিপশু পালন ও দিনমজুরের কাজকেই তিনি এখন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
আলম হোসেন বলেন, ‘স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে ৪ সদস্যের সংসার আমার। বড় মেয়ে রিমি (৭) স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে পড়ে। সাড়ে ৮ শতক জায়গার ওপর তার বসতবাড়ি। বাড়ির আঙিনার অব্যবহৃত ফাঁকা জায়গায় আমি বিভিন্ন শীতকালীন শাকসবজি চাষ করি।’ তাঁর আঙিনার বাগানে তিনি পুইশাক, পালংশাক, ডাটাশাক, লাউ, শিম, আলু, পেঁপে, বেগুন, পেঁয়াজ, মরিচ প্রভৃতি শাকসবজির আবাদ করেছেন।
তিনি জানান, নিজেদের খাবার পরও প্রতি সপ্তাহে দুদিন স্থানীয় শরৎনগর হাটে শাকসবজি বিক্রি করে থাকেন। এতে তার ভালো আয় হয়। সবজি ক্ষেতে তিনি ব্যবহার করেন জৈব সার। তার এ কাজে তাকে সাহায্য করেন স্ত্রী আকলিমা খাতুন। কোন কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা বা পরামর্শ ছাড়াই প্রয়োজনের তাগিদে নিজ উদ্যোগেই তিনি সবজি চাষ করেছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘বলা চলে বাজার থেকে মাছ ও তেল ছাড়া আমাদের তেমন কোন তরিতরকারি কিনতে হয় না। নিজেদের আবাদ করা সবজি দিয়েই খাওয়া চলে সারা বছর।’