জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে কৃষকদের মানববন্ধন
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার, শ্যামংয়েল হাসদা, আল্পনা রানী সরকার
“ঋতু বৈচিত্র্যকে সুরক্ষা করি, বন্যা নয় বর্ষা চাই” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সম্প্রতি জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে পুটাইল ইউনিয়নের মান্তা-জয়নগর গ্রামের এলাকাবাসির উদ্যেগে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় মো. নজরুল ইসলাম মাস্টারের সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মকর্তা সুবীর কুমার সরকার এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল চন্দ্র রায়। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন আব্দুল হামিদ গাজী, জিন্নত আলী, মোঃ শামীম, পারভীন আক্তার, মোঃ হোসেন আলী মাস্টার। বিশেষ আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ ধলাই কৃষক সংঘের সভাপতি মোঃ সেন্টু মিয়া ও বারসিক কর্মকর্তা শ্যাময়েল হাসদা ও আল্পনা রানী সরকার।
মান্তা, জয়নগর, বেগমনগর, হেলাচিয়া, কুন্দুরিয়া,বরুনার চকে গভীর পানির আমন মৌসুমের ধান চাষের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সু-পরিচিত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকদের আমন মৌসুমের চাষে যে সমস্যার পড়ছে কৃষকরা তাদের ফসলের চাষাবাদ নিয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে তাদের ক্ষতি ও সমস্যাগুলো নিয়ে আমন মৌসুমের ধানের জমিতে পানি ধরে রাখার জন্য বালিরটেক নদীর মাথায় সুইচগেট করে দিলে ২-৩ মাস পানি ধরে রাখা যাবে তাই মানববন্ধনে সকলেই দাবি তোলেন সূইচগেট করার জন্য।
অনুষ্ঠানে মোঃ হোসেন আলী বলেন, ‘বৈশাখ মাসে আমন জাতের -জুলদিঘা, ভাওয়ইল্যা, ছোট ভাওয়ইল্যা, দুধ ভাওয়াইল্যা, ডেপো, মানিক দিঘা, মধুমাইল, মুল্লা দিঘা, দিঘা, হিজলদিঘা, ধান জমিতে বুনা হতো। অনেক আমন ধানের জাত হারিয়ে গেছে, আমাদের মাটিকে রক্ষা করতে হলে আমন ধানের চাষ টিকিয়ে রাখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ ধানে কোন কীটনাশক দিতে হয় না প্রকৃতির পানির উপর নির্ভর করে চাষ করতে হয়।’ কৃষক মোঃ করিম মিয়া বলেন, ‘আমরা ভাওয়ইল্যা ধানের ভাত খাই বলে অসুখ-বিসুখ কম হয়। তাই আমরা আমন মৌসুমের ধান চাষ শেষ হতে দিবো না।’ কৃষানি বিউটি বেগম বলেন, ‘আমন ধান গভীর পানির ধান তাই এই জমিতে অনেক দেশী মাছ পাওয়া যায়। আমাদের সকলের দাবি সুইচগেট করলে আমাদের পানি ধরে রেখে আমন ধানের চাষ করা যাবে।
কৃষি গবেষণা ফোরামের আহবায়ক মোঃ মাসুদ বিশ^াস বলেন, ‘জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে সময়মতো বর্ষার পানি পাচ্ছি না। আমরা ফসলের ক্ষতি চাই না, ফসলের নায্যতা চাই। আমাদের মান্তা, জয়নগর, বেগমনগর, বরুণা, কুন্দুরিয়া-হেলাচিয়ার বিশাল জমিতে সনাতন পদ্ধতির আমন জাতের ধান, মাশকালাই, গম,মটর,তিল, খেশারী, পাট, ধৈঞ্চা, চৈতা সরিষা চাষ হয়। ফসলের সাথে কৃষি উন্নয়ন ও প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষা পাবে।