মানিকগঞ্জে কৃষকদের এলাকা উপযোগি জাত বাছাই
মানিকগঞ্জ থেকে মো. মাসুদুর রহমান
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের বরুন্ডী গ্রামের কৃষক সংগঠন চলতি আমন মৌসুমের শুরুতে মূল পরীক্ষণ প্লট, জাত সংরক্ষণ ও বীজ বর্ধন প্লটে ৬৮টি ধান জাত নিয়ে গবেষণা আরম্ভ করেন। সম্প্রতি স্থানীয় কৃষক সংগঠনের আয়োজনে জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ রওশন আলম, উপ সহকারী কৃষি অফিসার মো. রেজাউল করিম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন খান এর উপস্থিতিতে এবং বৈদ্যনাথ সরকারের সভাপতিত্বে মাঠ দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মাঠ দিবসের আলোচনায় উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ কর্তৃক কৃষি প্রনোদণার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বরুন্ডী কৃষক সংগঠনের ৬ জন সদস্যকে ভিত্তি বীজ (ধান ) প্রদানের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আমি কৃষক সংগঠনের মাসিক সভায় উপস্থিত থেকে মাঠের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে থাকি।’
জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার বলেন, ‘জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিস বিএডিসির মনোনীত ডিলারদের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে সঠিক সময় প্রয়োজনীয় মানসম্মত বীজ সরবরাহ করে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সকল ফসলের স্থানীয় জাতের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বীজ মান বজায় রেখে বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে হবে।’ তিনি কৃষকদেরকে জাত বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে নিয়মিত রোগিং করার পরামর্শ দেন এবং গবেষণালদ্ধ জাতগুলোর প্লটের দূরত্ব ৩ মিটার রাখতে বলেন। সরকারিভাবে ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রাপ্ত ডায়বেটিস প্রতিরোধী ব্ল্যাক রাইস জাতটি আসন্ন বোরো মৌসুমে বরুন্ডী জাত গবেষণা প্লটে ট্রায়ালের প্রস্তাব দেন।
কৃষক গবেষক দলের আহবায়ক মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘বারসিক’র সহযোগিতায় একদল কৃষক গবেষক সরেজমিনে ধান ও অন্যান্য মাঠ ফসলের বিভিন্ন জাত নিয়ে প্রায়োগিক গবেষণা করে আসছেন। আজকের মাঠ দিবস এই গবেষণার কাজটিকে আরো গতিশীল করবে।’ তিনি গোবর ও গো মূত্র দিয়ে তরল সার তৈরি প্রক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
গুরুদাস সরকার বলেন, ‘বরুন্ডী কৃষক সংগঠন মূল পরীক্ষণ প্লটে নতুন ৭টি জাত যুক্ত করেছেন, আপনারা জাতগুলোর উপযোগিতা যাচাই করবেন এবং পছন্দ হলে বীজের চাহিদা দিবেন যা কৃষক সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত বীজ ব্যাংকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।’ তিনি জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসারসহ সকলকে বীজ ব্যাংক পরিদর্শনের আহবান জানান।
মাঠ দিবসে সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে ১৮ জন কৃষক ও ৭ জন কৃষাণী কালোজিরা, রাজভোগ, ধনিয়া, মনিশাইল, রুপশাইল, রানারশাইল, চিনিগুড়া, মালতী জাতের ধান পছন্দ করেন এবং ১৬ কেজি বীজের চাহিদা করেন।