হাওরে কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রে প্রাণ-প্রকৃতির মেলা অনুষ্ঠিত
নেত্রকোনা থেকে সুমন তালুকদার
গোবিন্দশ্রী গ্রাম। তলার হাওরের পাড়ে অবস্থিত। সকাল থেকে নারীদের আয়োজনে গ্রামীণ পরিবেশে কৃষিউপকরণ, হাতে লেখা ফেস্টুন, ব্যানার, ধানের খড় দিয়ে সাজানো হয়েছে গোবিন্দশ্রী গ্রামের সালমা আক্তারের কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্র। আজ প্রাণ-প্রকৃতির মেলা। হাওরের প্রাণ-প্রকৃতিকে স্টলের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের সালমা আক্তারের কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রে সবুজের আহ্বানে কিশোরী সংগঠন ও তলার হাওর কৃষক সংগঠনের আয়োজনে ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহযোগিতায় প্রাণ-প্রকৃতির মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রাণ-প্রকৃতির মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মদন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও গোবিন্দশ্রী ্্্ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা মৌরি তানিয়া মৌ, গোবিন্দশ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান আকন্দ, সহকারী শিক্ষক খান আব্দুল বারী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো.অহিদুর রহমান, কৃষিগবেষক সুমন তালুকদার, কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক সালমা আক্তার, গ্রামের প্রবীণ কৃষক-কৃষাণী, যুবক ও কিশোরীরা।

মেলায় সরিষা, তিল, লালশাক, ডাটাশাক, মিষ্টিলাউ,লাউ, শসা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, বাঙ্গি, ঢেড়স, রশুনসহ ৩১ জাতের সবজি বীজ, গিমাই, বথুয়া, থানকুনি, শালুক, দন্দকলস, কলমী শাক, ফালই, ক্যাতাবুড়ি, বউটুনিসহ ৩৫ জাতের অচাষকৃত খাদ্য প্রদর্শন করা হয়। তাছাড়া হাওর ও কৃষি নিয়ে কুইজ, নাটক, আলোচনা, দেশাত্মবোধক গান, হাড়িভাঙ্গা খেলা ও পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়।

মেলায় উচিতপুর গ্রামের হাওর বীজ কৃষানি রহিমা আক্তার ৩১ জাতের সবজি বীজ ও সালমা আক্তার ৩৫ জাতে অচাষকৃত খাদ্য প্রদর্শন করেন। হাওরের কৃষক কৃষাণী যুবক কিশোরী গ্রামের এসব প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। প্রধান অতিথির ভাষণে মদন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও গোবিন্দশ্রী ্্্ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, “গোবিন্দশ্রী সালমার কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রে এমন সুন্দর আয়োজনে আমি মুগ্ধ। নানা রঙ বেরঙগের কাগজে লেখা কৃষি লোকায়ত জ্ঞান ও খনার বচন লেখা পোস্টারগুলো থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আমাদের নিজ নিজ গ্রামে, বাড়িতে সবজি চাষ করে নিরাপদ খাদ্য খেতে পারি এবং বীজ নিজেরা রাখতে পারি। হাওরে অনেক দুর্যোগ আসে তারপরও নিজের উদ্যোগে এগিয়ে যেতে হবে।”
মেলা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বারসির’র কর্মসূচি কর্মকর্তা মো. আলমগীর।