স্থায়িত্বশীল কৃষির জন্য কৃষকদের পরিবেশবান্ধব প্রচেষ্টা

নেত্রকোনা থেকে পার্বতী রানী সিংহ
কৃষি প্রধান দেশ বাংলাদেশ। এ দেশের প্রায় ৮০ ভাগ পরিবারের জীবিকাই হল কৃষি। কৃষি অনেকাংশেই নির্ভরশীল প্রকৃতির উপর। পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূল হলেই ফসল কৃষি উৎপাদন ভালো হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনের ফলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে কৃষির উপর। স্বাভাবিকভাবেই কৃষির উপর ক্ষতিকর প্রভাব গিয়ে বর্তায় কৃষক পরিবারের উপর। এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামের কৃষকরা প্রকৃতি ও বিভিন্ন প্রাণীর অস্বাভাবিক আচরণ, আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি দেখে প্রতিটি মৌসুমের ভবিষ্যৎ বলে দিতেন। কিন্তু বর্তমানে কৃষি বাণিজ্যিকিকরণের ফলে কৃষির বিভিন্ন উপকরণ যেমন-বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে। ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিক ফলনের নেশায় কৃষকরাও নেমেছেন উৎপাদনের প্রতিযোগিতায়। তারা অল্প সময়ে অধিক ফলনের লোভে জমিতে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও হরমোন ব্যবহারের ফলে জমির উৎপাদন শক্তি প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে ফসল ফলানোর জন্য কৃষকদেরকে প্রতি মৌসুমে এসব উপকরণের পরিমাণ বাড়াতে হচ্ছে। কৃষক হারিয়ে ফেলছে তাদের কৃষির অন্যতম উপাদান নিজস্ব ফসলের বীজ। প্রকৃতি থেকেও বিলুপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন উপাদান, প্রাণী ও উদ্ভিদ, লোপ পাচ্ছে প্রকৃতির সাথে মানুষে সখ্যতা।

প্রকৃতি ও আবহাওয়া তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলছে, জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে দ্রুত গতিতে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সরাসরি কৃষির উপর। চলতি খরিপ-২ ও রবি মৌসুমে দেশের সকল এলাকার কৃষকদেরকে ২/৩ বার করে জমিতে শস্য ফসলের বীজ বপন করতে হয়েছে। চলতি মৌসুমটি কৃষির জন্য প্রতিকূল আবহাওয়া হওয়ার ফলে বারবার জমিতে বীজ বপন ও রোপণ করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষক পরিবারগুলো ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু এরপরও আমাদের দেশের খাদ্য যোদ্ধারা থেমে নেই। জমির চারপাশের প্রাকৃতিক উপাদান, নিজস্ব জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও কৌশল ব্যবহার করে প্রতিনয়ত খাদ্য উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাকৃতিক সম্পদকে অবলম্বন করে এবং প্রকৃতির সাথে খাপখাইয়ে দেশের অনেক কৃষক দেশের মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন করে চলেছেন, যার জন্য আমরা আজ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

Exif_JPEG_420

নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের বামনমোহা গ্রামে এমনই বেশক’জন কৃষকের বসবাস। যারা বছরের প্রায় ৪/৫ মাস কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও খাদ্য উৎপাদন থেকে বিরত থাকেন না। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে খাদ্য উৎপাদন করে নিরলসভাবে কাজ করে চলা এমন কয়েকজন খাদ্য যোদ্ধাদের উদ্যোগগুলো সম্পর্কে পাঠকদের অবহিত করার প্রয়াস করছি।

বামনমোহা গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল কাইয়ুম (৩৫), পিতা-হাফেজ মো. আব্দুল মতিন। পিতার হাত ধরেই তার কৃষি কাজে হাতেখড়ি। পরিবেশবান্ধব উপায়ে কম খরচে ভালো ফলনের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় ফসল চাষ ও নতুন নতুন শস্য জাত সংগ্রহের প্রচেষ্টার জন্য গ্রামের অন্য কৃষকদের থেকে তিনি ভিন্ন। আব্দুল কাইয়ুম গ্রামের বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানকার নতুন নতুন শস্য ফসলের জাত সংগ্রহ করে আনা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। তিনি জমির ধরণ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন জাতের সবজি ও ধান চাষ, জমি ও ফসলের পরির্চযা কৌশল, চাষাবাদের চিন্তা-চেতনায় তিনি অন্য কৃষকদের থেকে আলাদা। তিনি ফসল চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার করেন না বললেই চলে। মাটির গুণাগুণ অক্ষুন্ন রাখার জন্য তিনি প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন-বিলের কচুরিপানা পঁচিয়ে কম্পোস্ট তৈরি করে পরিবেশসম্মত উপায়ে বৈচিত্র্যময় সবজি যেমন-বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, করলা ইত্যাদি চাষ করেন। কচুরিপনা দিয়ে ভাসমান বেড তৈরি করে তাতে তিনি পরীক্ষামূলক লাউশাক, তিল ও ডাটা চাষ করেছেন। কঠোর পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফল হিসেবে তিনি এ মৌসুমে প্রায় দেড় লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। গ্রামের কৃষকরা গত বোরো মৌসুমে পোকার আক্রমণ ও ধানে চিটা হওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেখানে তার ক্ষেতের ধানের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তার ধানের ফলনও ছিল অন্য কৃষকদের চেয়ে অনেক ভালো।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমি ধানের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোধে জমিতে প্রতি মৌসুমে বৈচিত্র্যময় জাতের ধান চাষ করি। গত বোরো মৌসুমে আমি চার জাতের ধান করেছিলাম, জাতগুলো ছিল- ঔটঘঊ-ঞ, তাদিয়ান কালো, খাটোজিরা, লম্বাজিরা ও সুবাস। যার ফলে আমার ধান ক্ষেতে তেমন রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ হয়নি এবং ফলনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’ তার ধানের ক্ষেতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ না হওয়ায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় গ্রামের অন্য কৃষকরা তার জমি দেখতে এসেছে এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তিনি আগ্রহী কৃষকদেরকে বৈচিত্র্যময় জাত চাষ ও জৈব উপায়ে চাষাবাদের উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন। গত বোরো মৌসুমে তিনি ২ জন কৃষকে ২ জাতের ধানের বীজ দিয়েও সহায়তা করেছেন।

কোন জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বর্ষা মৌসুমে পুকুরে মাছ চাষ, বর্ষা শেষে পুকুরের পানি কম গেলে পুকুরে তিনি ধান চাষ করেন। পুকুরের চারপাশে বছরব্যাপী তিনি জৈব উপায়ে বৈচিত্র্যময় সবজি- সরিষা, টমেটো, লাউ, কুমড়া, ঝিঙ্গা, করলা, শিম, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, ডাটা, কলমিশাক, মরিচ, পুইঁশাক, ঢেড়স, কুমড়া, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কাকরোল, শসা, পাটশাক ইত্যাদি চাষ করে তিনি পারিবারিক আয়ের বড় একটা অংশ নিশ্চিত করে থাকেন। তার উৎপাদিত সবজির রং, স্বাদ, আকার ও মান ভিন্ন হওয়ায় বাজারে তার সবজির চাহিদাও ব্যাপক। বাজারে সবজি বিক্রি করতে নিলে তাকে সবজি নিয়ে বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয় না এবং অন্যদের থেকে বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারেন। তিনি গ্রামে কৃষি বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ কৃষক হিসেবে পরিচিত। পরিবারের অন্য ৩ জন সদস্য তাকে কাজে সহযোগিতা করেন। এছাড়াও তিনি পুকুর পারে আদা, হলুদ, মরিচ ও ধনিয়া চাষ করেন।

বামনমোহা গ্রামের বিরাট অংশই বিল। বিল এলাকা হওয়ায় কৃষি জমির অধিকাংশই জলাবদ্ধ থাকে, তাই কৃষকরা সবজি চাষ করতে পারেনা। গ্রামের দু’একজন কৃষক রয়েছেন, যারা এই জলাবদ্ধতার সাথে খাপ খাইয়ে চাষাবাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন। বামনমোহা গ্রামের এমনই একজন কৃষক দুলাল মিয়া, যিনি অন্যান্য কৃষকদের থেকে ভিন্ন চিন্তা চেতনার ধারণ করেন। দুলাল মিয়ার বাড়িটি মূলত পুকুর পাড়ে। তিনি বর্ষা মৌসুমে বাড়ির চারপাশে জমে থাকা কচুরিপানার পর্যাপ্ততাকে কাজে লাগিয়ে এবং পানিজনিত সমস্যাকে সমস্যা মনে না করে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিলের কচুরিপানা স্তুপ করে একমাস ধরে পঁচিয়েছেন। কচুরিপানার পঁচে সার হলে আগাম সবজি চারা উৎপাদনের জন্য তা দিয়ে তনি ছোট ছোট কম্পোস্ট বল তৈরি করেন। পুকুরের পানিতে কলাগাছের ভেলার উপর মাটি দিয়ে ভাসমান বীজতলা তৈরী করে তাতে কচুরিপানার বলগুলো সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে তাতে বৈচিত্র্যময় সবজির বীজ যেমন- লাউ, টমাটো, মরিচ, বেগুন ইত্যাদি বপন করেছেন। জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই যাতে চারাগুলো মূল জমিতে রোপণ করা যায় তাই তিনি ভাসমান বীজতলায় আগাম চারা উৎপাদন করেন। ভাসমান পদ্ধতিতে আগাম সবজির চারা উৎপাদনের কারণ সম্পর্কে কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ‘ভাসমান বেডে চারা উৎপাদন করলে গরু-ছাগল, মুরগি ও শিশুদের নাগালের বাইরে থাকে বিধায় চারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকেনা। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে পানির জন্য যাদের চারা উৎপাদনের মত কোন উঁচু জমি নেই তারা সহজেই এ পদ্ধতিতে আগাম চারা তৈরি করে রেখে সবজির সঠিক মৌসুম ধরতে পারে। চারা উৎপাদনের জন্য মূল জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় না। আমার বাড়িটি পুকুরের পাড়ে, চারা উৎপাদনের তেমন কোন উঁচু জমি নেই। তাই আমি ভাসমান বীজতলায় আগাম চারা করে রাখি। অনেক পানি হলেও বীজতলা পানিতে ডুবেনা এবং চারা সুরক্ষিত থাকে। কচুরিপানার কম্পোস্ট বলে লাউ, করলা, বেগুন, শিম ইত্যাদি বীজ রোপন করায় বীজ থেকে চারা দ্রুত অঙ্কুরোদগমন হয় এবং বলসহ চারা জমিতে রোপণ সম্ভব হওয়ায় জমিতে রোপণের পর থেকেই চারা সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

কৃষক দুলাল মিয়া চলতি মৌসুমে সবজি ক্ষেতে গর্তে কচুরিপানা স্তুপ করে পঁচিয়ে লাউ ও করলা চাষ করেছেন। এতে করে সবজি উৎপাদনে তাকে বাড়তি কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয়নি এবং অতিবৃষ্টি ও রোদে চারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে সুরক্ষিত হয়েছে। যেখানে কৃষকরা সবজি চাষ করতে না পেরে ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশায় দিন যাপন করছে, সেখানে দুলাল মিয়া নিজের প্রতিকূলতাকে শুধুমাত্র নিজস্ব চিন্তা-চেতনা, অভিজ্ঞতা ও পরিশ্রমের দ্বারা মোকাবেলা করে সফল হয়েছেন এবং সামনে এগিয়ে চলেছেন, অনুপ্রেরণা যুগিয়ে চলেছেন গ্রামের অন্যান্য কৃষকদেরও।

কৃষক দুলাল মিয়াকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একই গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ (৪৮) চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে কচুরিপানা ব্যবহার করে সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বিলের জলাবদ্ধ জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষের জন্য কচুরিপানা দিয়ে ২ ফুট পুরু, ৩ ফুট প্রস্ত ও ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের ০৮টি ভাসমান বেড তৈরি করেছেন। বসতবাড়িতেও কচুরিপানার ১৫০০টি ছোট ছোট কম্পোস্ট বল তৈরি করে তাতে লাউয়ের চারা উৎপাদন করেছেন। লাউয়ের চারাগুলো রোপণের উপযোগি হলে কচুরিপানার ভাসমান বেডে সামান্য গর্ত করে সেগুলো রোপণ করেছেন। কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিলের পানি শুকিয়ে গেলে ভাসমান বেডগুলো জমিতে বসে যাবে। আর এতে তিনি কার্তিক মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রায় ৬ মাস ধাপে ধাপে লাউশাক, মিষ্টিকুমড়া ও করলা চাষ করবেন। বাড়ির চারপাশে ও জমিতে ঝঞ্জাল হিসেবে জম্মানো আগাছাগুলো সঠিক ব্যবস্থানার মাধ্যমে কৃষক দুলাল মিয়া ও কৃষক আব্দুল হামিদের মত কৃষকদের এই ধরনের কৌশল রাসায়নিক কৃষির সাথে প্রতিযোগিতায় স্থায়িত্বশীল ও টেকসই কৃষির টিকে থাকার অনন্ত প্রচেষ্টা।

Exif_JPEG_420

প্রতিকূল আবহাওয়ায় কৃষি কাজকে টিকিয়ে রাখতে পিছিয়ে নেই রাজেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষকরাও। এগ্রামের প্রায় সকলেই কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলতি রবি মৌসুমে বার বার বৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হতে হয়েছে। প্রতিবছর এ গ্রামের কৃষকরা সবজির চারা ও সবজি বিক্রি করে বছরের খরচ আয় করত। কিন্তু এ মৌসুমে আবহাওয়ার প্রতিকূলতার জন্য তারা বেশ হাতাশ। কিন্তু কৃষিই যে তাদের একমাত্র পেশা, তাই তারা আবহাওয়ার সাথে খাপখাইয়ে সবজির চারা উৎপাদনে অবলম্বন করছেন ভিন্ন কৌশল। গ্রামের কৃষকরা বীজতলা তৈরির জন্য বেড করে বৃষ্টি থেকে চারা রক্ষায় বেডের উপর বাঁশ ও পলিথিনের ছাউনি দিয়ে চারা উৎপাদন করছেন। প্রথম ধাপে তারা শীতকালীন সবজি যেমন-ফুলকপি, বাধাঁকপি ও টমাটো চারা উৎপাদন করে জমিতে চারা রোপণ করেছেন। পর্যায়ক্রমে তারা করলা ও লাউয়ের চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন। ভারী বৃষ্টি থেকে চারা রক্ষায় তারা পলিথিনের ছাউনির উপর পাটের চট বা কাপড় ঢেকে দিয়ে বীজতলা রক্ষা করেন।

মানুষের অধিক মূনাফা লোভ এবং বিলাসী জীবনযাপন, অতিমাত্রায় প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার, একই জমিতে অল্প সময়ে অধিক ফলনের আশায় রাসায়নিক উপকরণের অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পরিবেশবান্ধব কৃষি আজ বিপর্যস্ত। মানুষের দ্রুত বর্ধনশীল চাহিদা পূরণে প্রকৃতির মা মাটি আজ ক্লান্ত পরিশ্রান্ত। মাটি হারিয়ে ফেলছে তার প্রাকৃতিক উৎপাদন ক্ষমতা। কিন্তু মানুষ মাটির ভবিষ্যতের কথা না ভেবে শুধু মাটির কাছে চেয়েই চলেছে। মাটির টেকসই উন্নয়নে নিচ্ছেনা কোন স্থায়ী উদ্যোগ। বহুজাতিক কোম্পানির চোখ ধাঁধানো প্রচারণায় দেশের প্রায় সকল কৃষক আজ বিমোহিত। দেশের কৃষিতে কোম্পানির দৌরাত্মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বামনমোহা গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া, কৃষক আব্দুল হামিদ ও আব্দুল কাইয়ুমরা টেকসই কৃষির জন্য পরিবেশবান্ধব অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে।

happy wheels 2

Comments