![নার্সারি করে সফল বিহশ হাজং](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2024/05/3d960ca4-c3b9-40fd-ad84-1f2bca69e8e0-604x345.jpg)
নার্সারি করে সফল বিহশ হাজং
কমলাকান্দা নেত্রকোনা থেকে অর্জুন হাজং
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নে বাস করেন বিহশ হজাং। একসময় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তবে অনেকদিন আগে নার্সারিতে কাজ করতেন শ্রমিক হিসেবে। তারপর বারসিক’র সহযোগিতায় ২০২২ সালে ছোট পরিসরে শুরু করেন ফলদ বৃক্ষের নার্সারি। ফলদ বৃক্ষের নার্সারি করার কারণ হলো লেঙ্গুরা ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী এলাকা এবং এখানে বাংলাদেশে অংশে ছোট ছোট পাহাড় রয়েছে। সেখানে শাল বৃক্ষ শোভা পায় তবে অনেকটা কমে গেছে। যেসব পাহাড়ে শাল বৃক্ষ কমে দেখে সেসব পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে আকাশমনি, ইউক্লিপটাস গাছের বাগান করা হয়েছে। এসব গাছ পরিবেশের ক্ষতি করে জেনেও ঢালাওভাবে রোপণ করা হচ্ছে এসব গাছ।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2024/05/b4c2bb47-912b-47ac-a183-03cff368d24e.jpg)
পরিবেশের কথা চিন্ত করে বিহশ হাজং পরিবেশ উপযোগী গাছ দিয়ে একটি নার্সারি তৈরি করেন এবং মৌসুম ভিত্তিক যে বেকারত্ব সেটা দূর করা জন্যই তিনি নার্সারী করার সিদ্ধান্ত নেন। দিন মজুর হিসেবে সংসার চালাতে তার হিমশিম খেতে হতো। নিরুপায় হয়ে অনেক সময় বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হতো। যখন নার্সারী শুরু করেছিলেন তখন তার কাধে ছিল ৩০,০০০ টাকার ঋণ। পরিবারের খরচ ও এনজিও লোন পরিশোধ করতে তাকে অনেক কষ্ট করতে হতো।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2024/05/3d960ca4-c3b9-40fd-ad84-1f2bca69e8e0.jpg)
প্রথম অবস্থায় তিনি আম, জাম, কাঁঠাল, কাঠবাদাম, লিচু, পেঁয়ারা, বেগুন, পেঁপে, গোলাপজাম, সুপারি কৃষ্ণচূড়া, লেবু, জাম্বুরা, মালটা, কাজুবাদাম, নিম, আমরা, রামবুটান প্রভৃতি জাতের ৫ হাজার চারা উৎপাদন করেন। উৎপাদন করার নয় মাসের মধ্যে তিনি চারাগুলো নিয়ে পায়ে হেঁটে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যান। প্রথমদিন মাত্র সাতটি চার বিক্রি করেন ৩০০ টাকার বিনিময়ে। তখন তিনি কিছুটা ভেঙে পড়েন। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। পরবর্তীতে তিনি আরো বেশি বেশি চারা নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে যান। ধীরে ধীরে বিহশ হাজং এর পরিচিতি বাজারে বাড়তে থাকে এবং বিক্রির টাকা দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এনজিও ঋণ পরিশোধ করা শুরু করেন।
বিহশ হাজং চারার পাশাপাশি মধুরপুর থেকে একটি বড় নার্সারি থেকে কম দামে ভালো মানের চারা নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি করেন। তাতে আরো সাড়া পান তিনি। এভাবে নার্সারির চারা বিক্রি করে তিনি গত বছর তার এনজিওর ঋণ পরিশোধ করেন। নার্সারি করার ফলে লাভবান হয়ে তিনি এ বছর নাসারি করার জন্য আরো ১২ শতাংশ জমি প্রস্তুত করে চারা উৎপাদন করছেন। এভাবে তিনি নার্সারি বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
বিহশ হাজং বলেন, ‘২০২২ সালে বারসিক এর সহযোগিতায় এ নার্সারিটি শুরু করি। তখন আমার দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে হতো; দিন এনে দিন খেতে হতো। এখন এই নার্সারি থেকে মোটামুটি ভালো আয় করতে পারছি। মাঝখানে আমি মধুপুর গিয়ে গ্রাফটিং, জোড় কলম ও কাটিং কলম শিখে এসেছি। যার ফলে এখন কলম করেও আমার নার্সারি সাজাতে পারছি। ভবিষ্যতে আরো বড় আকারে নার্সারি করার স্বপ্ন আছে আমার।