সবুজ উদ্যোগ: ঢাকার বস্তিতে সবজির বীজ বিতরণ
ঢাকা থেকে ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল
মোহাম্মদপুরের পাইওনিয়ার হাউজিংকে সকলে সোনা মিয়ার টেক নামেই চেনেন। এই বস্তিতে বসবাস করে প্রায় এক হাজারেরও বেশি পরিবার। এই পরিবারগুলোর অধিকাংশই এসেছে দক্ষিণবঙ্গের ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে। দক্ষিণবঙ্গের বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষজন এখানে বসবাস করেন। সোনা মিয়ার টেক মূলত ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি বস্তি। এখানে বসবাসকারীরা চাইলেও সবকিছু করতে পারেন না। কিন্তু এ মানুষগুলো যেমন সংগ্রাম করে টিকে থাকেন এ শহরে, ঠিক এভাবেই এই বস্তিকেও তারা বদলাতে চায়। তাই তো গত ২৯ জুলাই সোনা মিয়ার টেক বস্তিতে বারসিকের উদ্যোগে বীজ বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। আর তাতে ব্যাপক সাড়া মিললো বস্তিবাসী নারী পুরুষ, বয়স্কসহ সকলের। সকলেই সানন্দে বস্তিকে সবুজ করার লক্ষ্যে ও নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে সবজি চাষের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বসতবাড়ীতে গীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্য নিয়ে এই বীজ বিতরণ করা হয়। এই বীজ বিতরণে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ ও বারসিক’র পরিচালক এবিএম তৌহিদুল আলম, সহযোগী প্রকল্প সমন্বয়ক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, সহযোগী কর্মসূচী কর্মকর্তা সুদিপ্তা কর্মকার, বস্তিবাসী নেতা আসমানী বেগম, রমজান আলী প্রমূখ।
বীজ বিতরণের প্রাক্কালে এবিএম তৌহিদুল আলম বলেন, ‘আমরা সকলেই জানি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কি পরিমাণ সবজি প্রয়োজন। এই সবজি সহজের ফলানো সম্ভব। আমরা যে বীজ প্রদান করছি তার অধিকাংশই লতানো যে কারণে এই সবজিগুলো এই কম জায়গায় সহজেই ফলানো সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘লাউ, কুমড়া, মরিচ, শশা, ঢেরশ, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির বীজ এখানে দিয়েছি। আপনারা এটি ভালোভাবে ফলিয়ে নিজেরা খেতে পারবেন এবং কি বিক্রিও করতে পারবেন।’ তিনি বীজ বপনের নিয়ম কানুন সম্পর্কেও সকলকে অবহিত করেন।
বস্তিবাসী নেত্রী আসমানী বেগম বলেন, ‘বস্তির মানুষ অন্যের জায়গায় থাকে বলে কিছু ফলাতে চায় না। কিন্তু বারসিক’র এই উদ্যোগের ফলে সকলেই উৎসাহিত হবে এবং আশা করি বস্তি সবুজে ভরে যাবে। কর্মসূচি থেকে ঘরে ঘরে গিয়ে বীজ বিতরণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, বস্তির দুজন প্রবীণ নারীর হাত দিয়ে প্রথম বীজটি বিতরণ করা হয়।