পাখি ও ফুল রক্ষার শপথে প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উদযাপন
নেত্রকোনা থেকে মো: আলমগীর
২২ মে। আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে বারসিক নেত্রকোনা অঞ্চলে গ্রীষ্মকালিন ফুলমেলা,পাখির বাসস্থানের জন্য গাছে কলসি বাঁধা, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় যুবদের শপথ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবছরের প্রাণবৈচিত্র্য দিবসের প্রতিপাদ্য: সকল জীবনের জন্য সমভাবে বণ্টিত আগামী। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আটপাড়া উপজেলার মঙ্গলসিদ্ধ গ্রামের কদমতলী যুব সংগঠনের সদস্যরা বারসিক’র সহযোগিতা নিয়ে গ্রীষ্মকালিন ফুল মেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। গ্রামের কিশোর কিশোরী, নারীরা ৪৭ জাতের গ্রীষ্মকালিন ফুল প্রদর্শন করেন এবং ফুলের ব্যবহার বিষয়ে বর্ণনা প্রদান করেন। ফুলমেলা উদ্বোধন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য সাদেকুন্নাহার। তিনি বলেন, ‘অনেক মেলার আয়োজন হয় কিন্তু আজ ফুলমেলার আয়োজন এই প্রথম উদ্বোধন করলাম। এখানে এসে ভালো লাগলো আমাদের এলাকায় এখনো ৪৭ জাতের ফুল পাওয়া যায়। দেখে অবাক হলাম।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার দরুণবালি গ্রামের ফুলপাখি কিশোরী সংগঠন, অক্সিজেন যুব সংগঠন, রক্তের বন্ধন যুব সংগঠন ও রাখালবন্ধু কৃষক সংগঠনের সদস্যরা গ্রামের শতবর্ষী গাছে পাখির নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য গাছে গাছে কলসি বেঁেধ দেন। পাখি রক্ষায় প্রতিবছর প্রাণবৈচিত্র্য দিবসে এ ্গ্রামের যুবরা গাছে গাছে কলসি বেঁধে দেয় এবং পাখির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে।
বারসিক নেত্রকোনা রিসোর্স সেন্টারের কনফারেন্স রুমে নেত্রকোনা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, সাতক্ষীরা অঞ্চলের যুবদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা জেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সভাপতি সায়েদ আহমেদ খান, জেলে সংগঠক যোগেশ চন্দ্র দাস, বারসিকের পরিচালক গবেষক পাভেল পার্থ, সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম। যুবরা নিজ নিজ এলাকার প্রাণবৈচিত্র্যর অবস্থা বর্ণনা করেন এবং বিলুপ্ত প্রাণী, গাছ, মাছ, প্রাণসম্পদের সম্পদের নাম লিখে প্রদর্শন করেন। বিলুপ্ত প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় শপথ ও মতবিনিময় করেন নিজ নিজ অঞ্চলের পক্ষে।
যুবরা বলেন, ‘অনেক পাখি,মাছ ও গাছ আজ হারিয়ে গেছে। প্রকৃতির সাথে আমাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। প্রকৃতিকে আমরা শুধুই নিঃশেষ করছি। বিনিময়ে কিছুই দিচ্ছিনা। আগামি পৃথিবীতে বাঁচতে হলে প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানকে তার মতো থাকতে দিতে হবে। নদী, খাল, বিল, হাওর,পাহাড়, বন সংরক্ষণ করতে না পারলে প্রাণবৈচিত্র্য বাঁচবে না। প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে না পারলে আমরাও ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবোনা।’