ভাষা শহীদের প্রতি গ্রামীণ নারীদের শ্রদ্ধার্ঘ্য
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে বিউটি সরকার
বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্বদ্যিালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো হয়। বিশেষ করে শহর এলাকাগুলোতে নারী পুরুষসহ সকল স্তরের অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। তবে সেখানে গ্রামীণ নারীদের অংশগ্রহণ তেমন লক্ষ্য করা যায় না। ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শহীদ মিনারে যাওয়া হয়ে উঠেনা গ্রামীণ নারীদের। প্রচলিত এমন ঘটনার বিপরীতে সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামে ভিন্ন ঘটনা পরিলক্ষিত হয়।
বায়রা গ্রামের কলেজ পড়ুয়া তরুণী আছিয়ার ত্বত্তাবধানে ও উৎসাহে কৃষাণিরা নিজেদের বাগানের কলাগাছ কেটে তাতে কাগজ মুড়িয়ে তৈরি করে ভাষা শহীদের জন্য শ্রদ্ধা বেদী। বায়রা গ্রামের মোট ৪৫ জন নারী তাদের তৈরি করা শ্রদ্ধা বেদীতে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজেদের ছোট সন্তানদের সাথে নিয়ে ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এমন ব্যতিক্রমী ঘটনার উদ্যেক্তা আছিয়া উপস্থিত সকলের সামনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে, প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়ে বায়রা গ্রামের নারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এ প্রসংগে বায়রা কৃষক কৃষাণী সংগঠনের সভাপতি রোকেয়া বেগম বলেন, “প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। সেখানে আমাদের মত গ্রামীণ নারীরা কখনই অংশগ্রহণ করতে পারতাম না। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট সঠিকভাবে জানতাম না। আজ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে সঠিক তথ্য জানতে পারলাম। এছাড়া নিজেদের তৈরি এই শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে আমি মনে মনে শান্তি পাইছি।”
রোকেয়া বেগমসহ উপস্থিত সকল নারীরাই নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারে প্রতিবছর ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কৃষাণী আন্না বেগম বলেন, “সিংগাইর উপজেলার পারিল গ্রামের ছেলে রফিক বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন আমরা তার জন্য গর্ব করি। এ বছর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে।”