নদী ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ

 

যমুনা নদীর ভয়াল ভাঙনে বিলীন হয়েছে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। ভাঙনকবলিত ইউনিয়নগুলো হলো চরকাটারী, বাঁচামারা ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন। চলতি মৌসুমে ৩ শতাধিক বাড়ি-ঘর আবাদী জমিজমা বিলীন হয়েছে।সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ওইসব এলাকার নদীভাঙন কবলিত মানুষেরা।

ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে চরকাটারী ইউনিয়নের লালপুর, চরকাটারী, কাঠালতুলি, চরকাটারী মন্ডলপাড়া, বোর্ড ঘর বাজার, চরকাটারী বাজার এলাকায়। যমুনা নদীর পাড়ে চরকাটারী ইউনিয়নে জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ীভাবে করা প্রতিরক্ষামূলক বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে ওইসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিসসহ শত শত বাড়ি-ঘর জায়গা-জমি।

IMG_20170706_171933

এ বছর নদীতে পানি আসার মাস খানেক আগে চরকাটারী ইউনিয়নে যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ে যমুনা নদী ভাঙন রোধকল্পে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতে ও  নদী ভাঙনে  বিলীন হয়ে যায় সেই প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ। ফলে ঐতিহ্যবাহী চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়, চরকাটারী বাজার, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভূমি মসজিদ, মাদ্রাসা ও শত শত বাড়ি-ঘর আবাদী জমি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে যায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ ঘর-বাড়ি-জিনিস-পত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ নিজের ভিটে মাটি হারিয়ে অন্যের জমির ওপর আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাঁশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

চরকাটারী মন্ডল পাড়ার আব্দুল খালেক মন্ডল এ প্রতিবেদককে জানান, নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন শুরু  হয়। এবার নিজের বাড়িতে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।

চরকাটারী বোর্ড ঘর বাজার এলাকার আলমগীর হেসেন এ প্রতিবেদককে জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি নদীতে বিলীন হওয়ায়  গরু-ছাগল নিয়ে এখন অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে কোন মতে থাকছেন।

এ বিষয়ে চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মন্ডল জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে চরকাটারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যান কেন্দ্র, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শত শত বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনি ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ভাঙন এলাকা  পরিদর্শণ করেছি এবং অর্থ বরাদ্দের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করেছি।” জরুরি ভিত্তিতে  ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা বলেন, “যমুনা নদী ভাঙন রোধ কল্পে করা অস্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক বাঁধের কিছু কিছু স্থানে ধ্বস দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

happy wheels 2

Comments